করোনা মাহামারীতের বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান হারে বেকারত্ব বাড়ছে। কাজের সুযোগ কম হয়ে আসায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী যে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে তাতে মাদক সেবন, পাচার ও উৎপাদন বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘ওয়ার্ল্ড ড্রাগ রিপোর্ট’ এ বলেছে, ২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে মোটামুটি ২৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষ মাদক সেবন করত, যা ২০০৯ সালের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।
এতে বলা হয়েছে, ভাইরাস রুখতে সীমান্তে কড়াকড়িসহ যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাতে রাস্তায় মাদকবিক্রি কমে এসেছে। ফলে এক দিকে মাদকের দাম বেড়ে গেছে, অন্যদিকে ভেজালের পরিমাণ বেড়েছে।
২০১৮ সালে বিশ্বের সাড়ে তিন কোটি মানুষ মাদকের অপব্যবহারজনিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগেছে বলেও তথ্য দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। বিশ্বজুড়ে চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর কী প্রভাব মাদকের কারবারে পড়ছে, তাও বোঝার চেষ্টা করেছে ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম-ইউএনওডিসি। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময় বিভিন্ন দেশ যেভাবে মাদক প্রতিরোধ এবং এ সংক্রান্ত চিকিৎসা খাতে খরচ কমিয়ে দিয়েছিল, এবারও তেমন হলে তার ফল খারাপ হবে বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘের এ সংস্থা।
মাদক পাচার রোধ করার পাশাপাশি মাদক ব্যবহারজনিত স্বাস্থ্য জটিলতা কাটাতে মানুষকে সহায়তা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এ বিষয়ে আরও সহযোগিতা দেওয়ার আহবান জানান ইউএনওডিসি’র নির্বাহী পরিচালক ঘাদা ওয়ালি। তিনি বলেন, ‘মাদক সমস্যার জন্য বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয় তরুণ, নারী, দরিদ্র এবং ঝুঁকিতে থাকা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে। চলমান কোভিড-১৯ সঙ্কট এবং অর্থনৈতিক মন্দা মাদকের এই বিপদকে আরও জটিল দিকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি তৈরি করছে, যখন স্বাস্থ্য খাত ও সামাজিক ব্যবস্থা এমনিতেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে, পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে সবাইকে রীতিমত যুঝতে হচ্ছে।’