কসবায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ে বন্ধ

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীর গায়ে হলুদ হয়েছে, আতœীয়-স্বজনসহ মেহমানদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়া-ধাওয়া চলছে। বর আসার অপেক্ষা। বিয়ের যাবতীয় কার্যক্রম প্রস্তুতি চলছে। মাদ্রসার ছাত্রীর এ বিয়ে খবর পেয়ে প্রথম শ্রেণীর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট ও কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ্এনও) মাসুদ উল আলম হাজির হন ওই শিশু কনের বাড়িতে। পরে শিশু কনের মা বাল্য বিয়ে দিবে না মর্মে মুচলেকা দিলে বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। আজ সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ব্রা‏‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের স্থানীয় একটি মাদ্রাসা নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীর (১৬) সাথে একই উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সৌদি আরব প্রবাসী এক যুবকের সাথে বিয়ের তারিখ চুড়ান্ত হয়। আজ সোমবার দুপুরে তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মেহমানদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। খাওয়া দাওয়া চলছে। শুধু বর আসার অপেক্ষা ছিল। বাল্য বিয়ের এ খবর পেয়ে আজ সোমবার দুপুরে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে ওই বাড়িতে যান। এ সময় শিশু কনের জন্ম নিবন্ধন দেখে জানতে পারেন শিশুটির বয়স মাত্র ১৬ বছর। শিশু কনের বাবা দুবাই থাকেন। বাড়িতে রয়েছে তার মা। এ সময় শিশুটির মাকে বাল্য বিয়ে দিলে আইনত দন্ডনীয় অপরাধ বিষয়টি অবহিত করেন। এ সময় শিশুটির মা তার অপরাধ বুঝতে পেরে মেয়েকে ১৮ বছর পূর্ণ না হলে বিয়ে দিবে না মর্মে মুচলেকা দিলে বিয়েটি বন্ধ হয়ে যায়।
শিশু কনের মা বলেন, বাল্য বিয়ে দেওয়া অপরাধ বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি বলেন, মেয়েটির বয়স ১৬ বছর হলেও অনেক বড় হয়ে গেছেন। আবার মেয়েটির বাবাও দেশে নেই। ভাল ছেলে পাওয়ায় বিয়ে ঠিক করেছিলেন। বর্তমানে ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিব না।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম বলেন, ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বাল্য বিয়ে দেওয়া অপরাধ। শিশুটি মাদ্রসার নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি। মেয়েটির বাবা দেশে নেই। মেয়েকে ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবে না মর্মে মেয়েটির মা মুচলেকা দিলে বিয়েটি বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি সার্বক্ষনিক নজর রাখা হবে, ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত যদি বিয়ের আয়োজন করা হয় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post Under