নিজস্ব প্রতিবেদক:
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশানরেটের প্রবৃদ্ধি ৩৮%! গত জুন ২০২০ এর তুলনায় এ প্রবৃদ্ধির হার ৬২% বেশি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের মধ্যে কুমিল্লা ছাড়া আর কারো গত জুন মাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। সেক্ষেত্রে কুমিল্লা কমিশনারেট সারা দেশের মধ্যে আবারো অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও ফেনী জেলা নিয়ে গঠিত। অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে টানা দশবার চ্যাম্পিয়ন সহ কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট একের পর এক নৈপুন্য দেখিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় অর্থনীতিতে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৩১৩৪ কোটি টাকার যোগান দিয়েছে। গত জুন মাসে কমিশনারেটের লক্ষমাত্রা ছিল ৩৬৯ কোটি টাকা আর আদায় হয়েছে ৫১০ কোটি টাকা। জানা যায়, কুমিল্লার সাফল্য আশাতীত, নজিরবিহীন! যেখানে মে মাসেও কুমিল্লা ছিল তের শতাংশ পিছিয়ে। অভাবিত এ সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে দেড় শতাধিক কর্মকর্তার নিরলস প্রচেষ্টা। বছরের শুরুতে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা রাহমাতুল মুনিম মুজিব বর্ষ ও মহামারীতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য আহবান এবং বছরব্যাপী সার্বক্ষণিক তদারকি অব্যাহত রাখেন। সেই আহবানে সাড়া দিয়ে এই অর্থবছরেই কুমিল্লা বিগত সব অর্থবছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় করেছে। করোনার এই ভয়াবহ নিদানকালেও কুমিল্লা গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় করেছে ৩১৩৪কোটি টাকা। এর আগে কুমিল্লা কমিশনারেটের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় ছিল ২৯৫৪ কোটি টাকা (২০১৮-১৯ অর্থবছর)।
কুমিল্লা বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিপন বলেন রাজস্ব আদায়ের জন্য বিভাগ হতে একাধিক বিশেষ টিম গঠন করা হয়। রাজস্ব আদায়ের জন্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বশরীরে যেতে হয়। পর্যাপ্ত ও সার্কেল পর্যায়ে গাড়ি না থাকা সত্তে¡ও কর্মকর্তাদের আন্তরিক পরিশ্রমের ফলে এ অর্জন সাধিত।
কুমিল্লা কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ আবদুল হাকিম বলেন বলেন, করোনাকালে কুমিল্লা টিমে বিশেষ তৎপরতা অব্যাহত আছে। সাহস ও উদ্যম নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রাজস্ব আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। যথাযথ রাজস্ব আদায় নিশ্চিতে উদ্যোগী হওয়ায় রাজস্ব আহরণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কুমিল্লা কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, মহামারীতে আগের বছরের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন। সেখানে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৬২%! ভয়কে জয় করে অর্জনকে এ পর্যায়ে নেয়া সহজ ছিল না। একটি ব্যতিক্রমী পরিশ্রমী কর্মপ্রবণ উদ্যমী দলের পক্ষে এমন অর্জন সম্ভব। অর্থবছরের প্রথম থেকে দেড়শ সদস্যের টীমকে ৪৭টি জুম সভায় প্রশিক্ষিত ও নিবিড় মনিটরিং করা হয়েছে। প্রশিক্ষিত টীমের সদস্যরা রাজস্ব নিশ্চিত করেছে। সার্কেলগুলোর মধ্যে লাল-হলুদ-সবুজের সুস্থ প্রতিযোগিতার অভূতপূর্ব সাফল্যের অন্যতম কারণ। টীমের সদস্যরা রাত ১১টা পর্যন্ত মাঠে অফিসে থেকে সাফল্য তালিকার ওপরে আসতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। সর্বোপরি, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ টীম সদস্যদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও অনলাইন রিটার্ন জমায় উপর্যুপরি সাফল্য এনে দিয়েছে। কমিশনারেটের অধীন ১৬টি সার্কেল ও ০৬টি বিভাগের সবাই আন্তরিক ছিল।