মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও এক নির্বাহী আদেশে আমেরিকায় অভিবাসনের বেশ কিছু খাত চলতি বছরের জন্য স্থগিত করে দিয়েছেন। ২২ জুন ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা এ নির্বাহী আদেশে অভিবাসনের বেশ কিছু জনপ্রিয় ক্যাটাগরির ভিসা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে গেল। আমেরিকার কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান অবারিত রাখতে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসন সংস্কার নিয়ে তাঁর ধারণা অনুযায়ী কাজ করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত নতুন এই আদেশে এইচ-১ ‘বি’ কারিগরি কর্মী ভিসা, এইচ-২ ‘বি’ ভিসা, এইচ-৪ খণ্ডকালীন কর্মী ভিসা, নির্দিষ্ট ‘জে’ ওয়ার্ক, শিক্ষা এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ভিসা এবং ‘এল’ এক্সিকিউটিভ ট্রান্সফার ভিসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বছরের শেষ অবধি এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। তবে যাদের ইতিমধ্যে ভিসা রয়েছে, তাঁদের ওপর এই আদেশের প্রভাব পড়বে না বলে আদেশে জানানো হয়েছে।
নির্বাহী আদেশ জারির পর ট্রাম্প প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছেন, এই পদক্ষেপের কারণে আমেরিকার প্রায় পাঁচ লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান অবারিত হবে। করোনা মহামারির মধ্য দিয়ে আমেরিকায় অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই বহু কোম্পানি তাদের কর্মীসংখ্যা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। বহু কোম্পানি বন্ধ হয়ে পড়েছে বা পড়বে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনকে অভিবাসন নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি পারিবারিক অভিবাসন বন্ধ করে মেধাভিত্তিক অভিবাসন চালু করার কথা বলে আসছিলেন। নানাভাবে নিয়মিত অভিবাসন বন্ধ বা সংকুচিত করার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। কখনো নির্বাহী আদেশ, কখনো নানা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাঁর এ প্রয়াস অব্যাহত আছে।
পুনর্নির্বাচনে নিজের সমর্থকদের খুশি করতেই মূলত অভিবাসন নিয়ে সব সময় সরব থাকছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়া শুরু হওয়ার পর গত এপ্রিলে প্রথম দফা ৬০ দিনের জন্য প্রায় সব ধরনের অভিবাসন কার্যক্রম স্থগিত রাখতে নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন ট্রাম্প। তখনই ধারণা করা হয়েছিল, তিনি এ প্রয়াস দীর্ঘায়িত করবেন।
নির্বাহী আদেশ জারি করার আগেই ২০ জুন আগাম ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি মনে করি, এ সিদ্ধান্ত অনেক মানুষকে খুশি করবে।’
রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, অভিবাসন নিয়ে এ সিদ্ধান্ত আমেরিকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রভাব ফেলবে। নিয়মিত অভিবাসন বিশেষ করে কর্মভিসা আমেরিকার অর্থনীতির জন্য খারাপ, এ কথাটি আমেরিকার অর্থনীতি যাঁরা বোঝেন না, তাঁদের জানার কথা নয়।
ইউএস চেম্বার অব কমার্সের সিইও থমাস জে ডানহিউ বলেছেন, আমেরিকার ইমিগ্রেশনের নিয়ন্ত্রিত পরিবর্তন আমেরিকার বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক কর্মপ্রবাহকে বাইরের দেশে ঠেলে দেবে।