কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রোববার (২৮ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হয় কিন্তু চেয়ারম্যান পদের এক প্রার্থীর ব্যালেট পেপারে প্রতীক মুদ্রণে ভূল হওয়ায় নির্বাচন শেষ হওয়ার মাত্র দেড় ঘন্টা আগে চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন। সংরক্ষিত সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৮ এপ্রিল) কুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৩জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৫জন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। সকাল আটটা থেকে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। বেলা দেড়টার দিকে চেয়ারম্যান পদের একজন প্রার্থী ইউসুফ আহম্মেদ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের সময় তাকে অটোরিক্সা প্রতীক দেওয়া হয়েছে কিন্তু ব্যালট পেপারে মুদ্রিত হয়েছে রিক্সা প্রতীক। রিটার্নিং কর্মকর্তা ওই আবেদন নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করেন। বেলা আড়াইটার দিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ সচিব মো. আতিয়ার রহমানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কুটি ইউনিয়ন পরিষদের শুধুমাত্র চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন স্থগিত করেন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়নি। ওই দুই পদের নির্বাচন যথারিতি চলবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ইউসুফ আহম্মেদ বলেন, আমি নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছি অটোরিক্সা। প্রচারনা চালিয়েছি অটোরিক্সা কিন্তু ব্যালট পেপারে মুদ্রিত হয়েছে রিক্সা। আমার কর্মী-সমর্থকরা ভোট দিতে গিয়ে প্রতীক পায়নি। তাদের মাধ্যমে জানতে পেরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
চেয়ারম্যান পদের আনারস প্রতীকের প্রার্থী কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. মোস্তাক আহমেদ বলেন, এটি একটি বড় ভুল। রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে একটি আর ছাপিয়েছে অন্যটি। রিটার্নিং কর্মকর্তা আমাদের সাথে একটি বৈঠকও করেননি। তাদের ভুলের কারনে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। নির্বাচনে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী ছিলাম।
আরো পড়ুনঃ
চেয়ারম্যান পদের অপর এক প্রার্থী মো. ফারুক ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার ভুলের দায় আমরা প্রার্থীরা নিবনা। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এই দায় নিতে হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা অনেক শ্রম দিয়েছি। প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে ভোটাররা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছে। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী ছিলাম। আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবী করছি, যে পরিমান ভোট হয়েছে তা গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে গণনা করতে হবে।
কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউপি নির্বাচন রিটানিং কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস বলেন, প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর প্রত্যেক প্রার্থীর নির্ধারিত প্রতীক নির্বাচন কমিশনে লিখিত ভাবে পাঠানো হয়েছে। ব্যালট পেপার মুদ্রণের সময় প্রতীক ভুল করে ছাপা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের চোখে পড়েনি। বেলা দেড়টার দিকে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ইউসুফ আহম্মেদ লিখিত ভাবে বিষয়টি আমাদেরকে অবহিত করেন। তৎক্ষনাত বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করলে বেড়া আড়াইটার দিকে নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থগিত করেন। কিন্তু সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য পদের নির্বাচন চলতে থাকবে।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শাহারিয়ার মুক্তার বলেন, চেয়ারম্যান পদের এক প্রার্থীর প্রতীক মুদ্রণে ভুল হওয়ায় শুধুমাত্র চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। অন্যপদের নির্বাচন চলবে।
আজ রোববার সকাল থেকেই ১১টি নির্বাচনী কেন্দ্রের মধ্যে ৮টি কেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা গেছে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সরব উপস্থিতি প্রতিটি কেন্দ্রে লক্ষ করা গেছে। ইউপি সদস্য, মহিলা সদস্য ও চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা ও তাদের সমর্থিতরা প্রচন্ড রোদ ও গরম উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছে। বেলা আড়াইটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন স্থগিত হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেন। এতে করে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।