কসবায় মোবাইল ফোনের জন্য অটো চালককে হত্যা লাশ উদ্ধার ঘাতক আটক

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সামান্য একটি মোবাইল ফোনের জন্য বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার ১০ দিন পর মহসিন মিয়া (২৪) নামে এক অটো চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে কসবা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোরে উপজেলার কুটি ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রাম থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মহসিন মিয়া উপজেলার কুটি ইউনিয়নের রানিয়ারা গ্রামের আয়েত আলীর ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত পাশ্ববর্তী গ্রামের মন মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়াকে চট্রগ্রাম থেকে বুধবার রাতে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আয়েত আলী বাদি হয়ে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের চাচাতো ভাই বাহারুল ইসলাম জানান, মহসিন মিয়া একজন অটোচালক। মহসিন কিছুদিন আগে একটি মোবাইল বিক্রি করে তাদের পাশের বিষ্ণুপুর গ্রামের মন মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়ার নিকট। মোবাইলটি বিক্রির পর তার ব্যবহৃত নাম্বারগুলো সংরক্ষনের জন্য মোবাইলটি ফেরত আনে। মোবাইলটি ফেরত দিতে দেরী করাকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় রাসেল মিয়া। মনের ভেতর রাগকে পুষে রেখে ১৬ ডিসেম্বর রাতে মহসিন ভাত খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এমন সময় রাসেল মিয়া তাকে ডেকে বাহিরে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই নিখোঁজ হয় মহসিন মিয়া। পরদিন থেকে রাসেল মিয়াও এলাকা ছেড়ে চলে যায়। মহসিন মিয়াকে পরিবারের লোকজন কোথাও খুঁজে না পেয়ে ১৮ ডিসেম্বর রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে কসবা থানায় জিডি করে পিতা আয়াত আলী ( জিডি নং-৯৬৭)। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাসেল মিয়াকে গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পরে কসবা থানা উপপরিদর্শক কামাল হোসেনের নেতৃত্বে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। রাসেল মিয়াকে নিয়ে আসার সময় পুলিশের নিকট স্বীকার করে মহসিনকে সে এবং রিপন মিয়া মিলে হত্যা করে শান্তিপুর গ্রামের ছোবহান মিয়ার পরিত্যাক্ত বাড়িতে ফেলে রেখেছে। পুলিশ তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় মহসিনের অর্ধগলিত লাশ পড়ে রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মহসিন মিয়ার আড়াই বছরের একটি মেয়ে ও ৪০ দিন বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
পিতা আয়াত আলী জানান, সামান্য একটি মোবাইল বেচা-কেনার ঘটনায় পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করে আমাকে করেছে সন্তানহারা। আমার দুটি নাতি-নাতনী এতিম হয়ে গেছে। আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে চট্রগ্রাম থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

Post Under