নিজস্ব প্রতিবেদক:
কসবা উপজেলার মাদলা গ্রাম সহ সীমান্তবর্তী গ্রাম গুলোতে চলছে অবৈধ মাদকের রমরমা ব্যবসায়। ব্যবসার সুবিধার্তে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস ম্যাপে মোবাইল নম্বর সহ বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। এতে করে মাদক সেবনকারী বা অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। এসব ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাঝে মধে খুচরা বিক্রেতারা গ্রেফতার হলেও আড়ালে থেকে যান মাদকের রাঘব বোয়ালেরা।
জানা যায়, গত ২৪ জুন ২০২৩ইং শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ১০নং বায়েক ইউনিয়নের মাদলা গোপীনগর পশ্চিম পাড়া গ্রামের পাদুয়ার পাড় এলাকার শহীদ ফকিরের(৭০) ছেলে মাদক ব্যবসায়ী স্বপন মিয়াকে (৪৩) কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি স্পেশাল টিম আনুমানিক দেড় লাখ টাকার মাদক সহ হাতেনাতে তার নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। কিন্তু স্বপনকে দিয়ে যারা মাদক ব্যবসায় চালিয়েছে সেই রাঘম বোয়ালেরা রয়েছে গেছে বহাল তবিয়তে। এতে করে এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার সচেতন মানুষের দাবী মাদকের গডফাদারদের বের করে এলাকা মাদক ও চোরাচালান মুক্ত করা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় মাদক ব্যবসায়ী স্বপন মিয়া কিছু সমাজ পতিদেরকে টাকার বিনিময়ে হাত করে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে বিগত ৩ বছর যাবৎ ইন্টারনেটে জিপিএস ম্যাপে প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে এই অবৈধ মাদক ব্যবসা চালিয়েছেন। গুগল ম্যাপের জিপিস সিস্টেমে স্বপন মিয়ার মদের দোকান দেখতে পাওয়া যায় এবং এই অনলাইন ম্যাপে তার মদের দোকানের সনাক্তকরন ও মোবাইল নম্বর সহ কবে ও কখন খোলা থাকে তা দেখ যায়।
সূত্র আরও জানায়, এই স্বপন মিয়া একজন মাদক বিক্রেতা মাত্র, তার পেছনে আশ্রয় ও প্রস্রয় দিচ্ছে স্থানীয় অনেক বড় বড় প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী যাদের ভয়ে স্থানীয় নিরীহ জনগন মুখ খুলতে রাজি হয় না। এলাকার স্থানীয় সংগঠন ” পরিবেশ রক্ষা কমিটির” সভাপতি আলাউদ্দিন(৬০) জানান, স্বপন মিয়ার বাড়িতে নিয়মিত মাদকসেবীরা মাদক নিতে আসে দূর-দূরান্ত হতে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গাড়িতে করে মাদক কিনতে ও নিরাপদে সেবন করতে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানায় স্বপন মিয়া গ্রেফতার হলেও তার মূল হোতা রাঘব বোয়াল মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী প্রকৃতি যেসকল লোক তাকে দিয়ে ব্যবসা করিয়ে মূল লভ্যাংশটা হাতিয়ে নেয় সে সকল অপরাধীদের একজনও গ্রেফতার না হওয়ায় এখনও এই মাদক ব্যবসা অত্র গ্রাম হতে একটুকুও কমে নি, বরং কৌশল পাল্টে তা আরো বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাঘমবোয়ালদের অন্যতম একই গ্রামের মৃত আ:মান্নান ওরফে মুনাফ মিয়ার পুত্র বহু মামলার আসামী, নামকরা দাদন ও মাদক ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম ওরফে সুদখোর আমিন(৬৫), সুদখোর আমিনের ছোট ভাই গরু চোরাকারবারি জসিম উদদীন ওরফে টাকলা জসিম, মৃত জুলফু মিয়া ওরফে ভুট্টোর কনিষ্ঠ পুত্র মাদক ব্যবসায়ী আলী আশরাফ এরশাদ এবং সাজন আলীর ছেলে বহু মামলার আসামী ও মাদক চোরাকারবারি ডিজে রুবেল(৩৫) প্রমুখ।
এলাকাবাসী জানায় স্বপন মিয়া আটকের পর হতে সিন্ডিকেট নতুন ভাবে ব্যবসার কৌশল পরিবর্তন করেছে। এখন নিকটবর্তী এলাকার মাদক সেবীদের নিকট আর দিনের বেলায় তারা মাদক বিক্রি করে না। দূরবর্তী এলাকার মাদক সেবীদের মোবাইলে যোগাযোগ করে আশেপাশের হালিম মার্কেট, গফুর প্লাজা ও বেলতলী হাবুল চৌমুহনীতে তারা মাদক পৌঁছে দিয়ে আসে। এই নতুন পদ্ধতিতে মাদক বিক্রিতে তারা শিশু ও মহিলাদের ব্যবহার করে। মহিলারা বোরকা পড়ে বেনিটি ব্যাগে করে এবং শিশুরা বাজারের ব্যাগে করে প্রশাসন ও এলাকাবাসীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এই ব্যবসা চালায়।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উপ পরিদর্শক মো:রেজাউল করিম জানান, অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক(গোয়েন্দা বিভাগ) মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন আমি এ অভিযোগটি তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ পরিদর্শক কে নির্দেশ প্রদান করেছি।