কসবার সাত ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত, বিধি লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা

কসবা (ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রা‏‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে আজ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ভোট হয়েছে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। উপজেলার বায়েক ইউনিয়নে নির্বাচন চলাকালে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে পৃথক চার প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ সোমবার কসবা উপজেলার বায়েক, কাইমপুর, কসবা পশ্চিম, বিনাউটি, মেহারী, বাদৈর ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে কসবার কাইমপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাজিসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিনাউটি ইউনিয়নের চাপিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চকচন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসা ও গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভাতশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চন্ডিদ্বার উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভোট দেওয়ার জন্য সকাল থেকে নারী-পুরুষ ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। দীর্ঘসময় ধরে লাইনে দাড়াঁনো ছিল ভোটাররা। ভোট দেওয়ার সময় কিছু অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন বয়স্ক ও নারি ভোটারদের ভোট দেওয়ার সহযোগিতার নামে নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা পুলিং কর্মকতা ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা গোপনকক্ষে গিয়ে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।
কসবার কাইমপুর ইউনিয়নে অটোরিক্সার প্রতীকের চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী মো. ইয়াকুব আলী ভূইয়া বলেন, আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে পুলিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা বুথে গিয়ে আনারসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, আগেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দায়িত্বে না দেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছিলাম।

কাইমপুর ইউনিয়নের জাজিসার কেন্দ্রে কাইমপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, কেন্দ্রের বাহিরের আইন শৃংখলার দায়িত্ব আমাদের। কেন্দ্রের ভিতরে দেখার দায়িত্ব প্রিজাইডিং কর্মকর্তার।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, বায়েক ইউনিয়ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আল মামুন ভূঁইয়ার চশমা প্রতীকের এজেন্ট জাকির হোসেনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপরদিকে একই ভোট কেন্দ্রের সদস্য প্রার্থী সালেকা বেগম মাইক প্রতীকের এজেন্ট জহিরুল ইসলামকে ৫ হাজার টাকা, এ ভোটকেন্দ্রের অপর কক্ষে সালেকা বেগম মাইক প্রতীকের এজেন্ট মানিক মিয়াকে ৫ হাজার টাকা ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন অটোরিক্সা প্রতীকের এজেন্ট মরিয়ম আক্তারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অপরদিকে কাশিরামপুর কেন্দ্রে মোবাইল সাথে এক সদস্য প্রার্থীর এজেন্টকে ৫ হাজার টাকা এবং বিকালে নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে চেয়ারম্যান প্রার্থী আল- মামুন ভূইয়ার সমর্থক সাদেক সরকার নামে এক ব্যক্তি প্রভাব বিস্তার করায় তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন বায়েক ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন। তিনি বলেন, নির্বাচন চলাকালে এজেন্টদের কাছে মোবাইল ও ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগে চার প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থককে নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় তাদেরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড কেন্দ্রে ঘোড়া প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেয়া, জোর করে চেয়ারম্যানের ভোট দিয়ে দেয়া, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের অটোরিক্সা প্রতীকের পক্ষে কাজ করা অভিযোগ করেছেন আবু ইউসুফ ভূইয়া ও তাঁর সমর্থকেরা। তাছাড়া তাঁর সর্মকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। কোল্লাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঘোড়া প্রতীকের এজেন্টকে বের করে দেয়ার চেষ্টা ও বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য ষষ্ঠধাপের ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫০জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৭৬জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৩২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন।

Post Under