কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের সালদানদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ী ঢলে আর অতিরিক্ত বৃষ্টি পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষজন। আজ শনিবার আরো পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) হায়ায় উদ দৌল্লা খান দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি বন্দি শতাধিক পরিবারের মাঝে চাল, আলু, ডাল, পেয়াজ, তেল, চিনিসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় হরিপুর বাজারে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌল্লা খান, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল কাউছার ভূইয়া, কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম, কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাছিবা খান, কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া, বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আল-মামুন ভূইয়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সামিউল আলম, কসবা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মো. শাহআলম চৌধুরীসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ।
উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা এলাকা থেকে সালদানদীর উৎপত্তি। গত তিনদিনের প্রবল বর্ষন ও ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ী ঢলের পানিতে কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের সালদানদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ শনিবার আরো সালদা নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়েক ইউনিয়নের কৈখলা- খাদলা বেলতলী সড়ক, হরিপুর বাজার থেকে পেট্রোবাংলা সড়ক, শেরেবাংলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কোল্লাপাথর সড়ক, শ্যামপুর সড়ক, কৈখলার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বড় বায়েক, হরিপুর, বিদ্যানগর, নিশ্চিন্তপুর, গৌরাঙ্গলা, শ্যামপুর, পুটিয়া ও খাদলাসহ প্রায় ১০ গ্রামের সাধারণ লোকজন পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
ওই গ্রামগুলির কৃষি জমি ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। অতিরিক্ত পানির কারনে পাঁচ হেক্টর রোপা আমানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশ কয়েকটি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আল-মামুন ভূইয়া বলেন, সালদানদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ শনিবার পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০টি গ্রামের লোকজন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস আজ শনিবার বিকালে প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। ভারতের বৃষ্টির পানি সালদানদী থেকে বিজনা নদী হয়ে পৌছে বুড়ি নদীতে। বুড়ি নদী থেকে তিতাস হয়ে মেঘনা নদী পৌছে এ পানি। দুই একদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে। তারপরও বিষয়টি উদ্ধর্ধন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তিনি বলেন, সালদানদীটির কোন পাড় ভেঙেছে কিনা খোজঁখবর নিচ্ছি। যদি বাঁধের কোন অংশ ভাঙ্গা থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম বলেন, পানিবন্দি ১০০টি পরিবারের মানুষের মাঝে ১০কেজি চাল, আলু, ডাল, পেয়াজ, তেল, চিনিসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষের খোজঁখবর নেওয়া হচ্ছে। পানি না কমলে আরো ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে।