কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি রাতের আধারে বিলুপ্ত ঘোষনার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
এতে ছাত্রলীগের কসবা উপজেলা, ১০টি ইউনিয়ন ও কসবা পৌরসভাসহ ওয়ার্ড কমিটির সাবেক ও বর্তমান কমিটিতে পদে থাকা বিপুল পরিমান নেতা-কর্মী অংশ নিয়েছে। নেতা-কর্মীরা বিলুপ্ত হওয়া কমিটি পুনরায় বহাল করার দাবী জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে গত বুধবার গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের যৌথ স্বাক্ষরে কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেন। এতে বলা হয়েছে কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবিরতা হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের এক জরুরী সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেন।
রাতের আধারে উপজেলা কমিটির বিলুপ্ত হওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল থেকে কসবা উপজেলা পরিষদের মাঠে কসবা উপজেলা, ১০টি ইউনিয়ন, কলেজ ও কসবা পৌরসভাসহ এবং ওয়ার্ড কমিটির সাবেক ও বর্তমান পদে থাকা বিপুল পরিমান নেতা-কর্মী আসতে থাকে। একপর্যায়ে পুরো মাঠ কানায় কানায় ভরে উঠে। সেখানে তারা বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছেন।
কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য সাফায়েত হৃদয়ের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. এমরান উদ্দিন, কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মনির হোসেন, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সদস্য সুমন রানা, বিনাউটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক আলাউদ্দিন নাছিম, সৈয়দাবাদ আদর্শ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শ্যামল, কুটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক তুহিন আহাম্মদ, বায়েক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহাম্মদ, মেহারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক বসির আহাম্মদ, গোপীনাথপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক , পাশা আলী ও শারফিন, কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফজলে রাব্বি প্রমুখ।
আরো পড়ুনঃ
বক্তারা বলেন, রাতের আধারে বিলুপ্ত হওয়া কমিটি বহাল করার দাবী জানান। এ কমিটির মাধ্যমে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করার কথা বলেছেন।
কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. এমরান উদ্দিন বলেন, রাতের আধারে গভীর রাতে কমিটি ভেঙে দেওয়ার ইতিহাস নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উপজেলার জৈষ্ঠ নেতা-কর্মীদের সাথে আলোচনা করে আনুষ্ঠানিক ভাবে কমিটি করবে। রাতের আধারে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করার বিষয়টিকে আমি ধিক্কার জানাচ্ছি।
কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মনির হোসেন বলেন, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি সারা বাংলাদেশের মধ্যে একটি শ্রেষ্ঠ কমিটি। জেলা কমিটি থেকেও অনেক শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। কিন্তু রাতের আধারে রহস্যজনক ভাবে একটি কমিটি বিলুপ্ত হতে পারে না। যারা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেছে তাদের কমিটিই অনেক আগে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, নতুন নেতৃত্ব আসার জন্য দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়েছে। তাদের সাথে আলোচনা করেই আবারও নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
বিলুপ্ত হওয়া কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির আহবায়ক আফজাল হোসেন বলেন, কসবা উপজেলা একটি শক্তিশালী কমিটি। বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ও কলেজ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা করে উপজেলা নির্বাচনের পর একটি কমিটি গঠনের জন্য বলা হয়েছে। তারা সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা না করেই রাতের আধারে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেছে। স্থানীয় ছাত্রলীগ সংসংগঠিত। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।