ফয়সাল মিয়া, কুবি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আব্দুল মঈনকে প্রধান আসামি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমন্বয়ক মো. শাখাওয়াত হোসেন।
মামলায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আব্দুল মঈন ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত ও আবু উবাইদা রাহিদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক রশিদুল ইসলাম শেখকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ৩৫ জন ও অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১১ জুলাই বেলা ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ছিল ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক থেকে বের হয়ে একটু সামনে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ পার হলেই একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মারাত্মক আহত হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আব্দুল মঈন, প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত ও আবু উবাইদা রাহিদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক রাশিদুল ইসলাম শেখের নির্দেশে এজাহারনামীয় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্রলীগের নেতারা শিক্ষার্থীদের ওপর এ ন্যাক্কারজনক হামলা চালান।
মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সাবেক প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমি মামলার বিষয়ে জানতে পেরেছি, এটা আমরা আইনগত ভাবে মোকাবেলা করবো।
মামলার আরেক অভিযুক্ত সাবেক সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত বলেন, এটি সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। যা একজন শিক্ষক হিসেবে আমার জন্য বিব্রতকর।
তিনি আরও বলেন, ১১ জুলাই দায়িত্বের কারণেই মূলত আমার ঘটনাস্থলে থাকা। সেখানে উপস্থিত কেউই বলতে পারবেনা মামলায় উল্লেখকৃত কোন অপরাধের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা ছিলো। এটা নিতান্তই আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।
মামলার বিষয়ে বাদী মো. শাখাওয়াত হোসেন এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে একটা মামলা করা হয়েছে। সেটা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা যাচাই করবে, যদি অভিযুক্ত না হয়ে কারও নাম আসে তাহলে তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।