বিদেশ গমনেচ্ছু এবং বিদেশগামী অভিবাসী কর্মীদের সেবা সহজিকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর, ২০২২) কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে ৩ দিনের প্রাক-বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) কোর্স উদ্বোধন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল মান্নান, পিপিএম (বার) এবং কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোঃ কামরুজ্জামান। সভাপতি ছিলেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারি পরিচালক দেবব্রত ঘোষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, প্রবাসী কর্মীদের কষ্টার্জিত অর্জিত অর্থের অপব্যাবহার না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বিলেন, বেশী টাকা খরচ করার মধ্যে কোন কৃতিত্ব নেই বরং টাকা সঞ্চয়ের মধ্যেই কৃতিত্ব এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ নিহিত রয়েছে, এ ছাড়াও তিনি কারিগরি প্রশিক্ষণের গুরুত্ব এবং এর সুফল সম্পর্কে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল মান্নান আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের ধারণা, কারণ, প্রভাব ও প্রতিরোধ, দুর্নীতির ধারণা, কারণ, প্রভাব ও প্রতিরোধ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এছাড়াও তিনি বিদেশগমনের সময় বাংলাদেশী যাত্রীদের বিমানের অভ্যন্তরে আচার ব্যবহার নিয়ম নীতি ও অনান্য দেশের মানুষের সাথে আচার আচরণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন, কারন বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের আচরণের সাথে বাংলাদেশের সম্মান জড়িত রয়েছে।
বিশেষ অতিথি কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বছরজুড়ে কুমিল্লা কারিগরি কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ ও বিদেশগামিদের পিডিও প্রদান করা হয়। ধরাবাঁধা সময় নেই। সাধারণত একটি প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর আরেকটি প্রশিক্ষণ শুরু হয়। সাধারণত কোর্স ভেদে ছয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে এক বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী কোর্স বেছে নিতে পারেন।
অতান্ত কম খরচে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে এ ছাড়াও কিছু কিছু প্রশিক্ষণ রয়েছ যে গুলো সম্পন্ন করলে কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ ভাতাও প্রদান করা হয়। এখান থেকে বিদেশফেরত দক্ষ কর্মীরা আরপিলএল সনদ নিতে পারেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারি পরিচালক দেবব্রত ঘোষ জানান, ৩ দিনের প্রাক-বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) কোর্সের মাধ্যমে আমরা বিদেশ গমনেচ্ছু এবং বিদেশগামী অভিবাসী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন, অভিবাসন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম, প্রবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কল্যাণ কার্যক্রম, মানব পাচার, বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা, রেমিটেন্স ব্যবস্থাপনা, সামাজিক খরচ (Social cost), আর্থিক স্বাক্ষরতা, পুনরেকত্রিকরন, দেশে ও বিদেশে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, সাইবার অপরাধ, সাইবার নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সচেতনতা, গন্তব্য দেশের আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি, ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান করতে সক্ষম হব যা কর্মীদের অভিবাসন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে কাজে লাগবে।
অনুষ্ঠানে ১০০ জন বিদেশগামী কর্মী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইসিএমপিডি, হেলভেটাস বাংলাদেশ, ব্র্যাক, রামরু, ওয়্যারবী, ওকাপ, সিসিডিএ-এর প্রতিনিধিবৃন্দ।