নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহান স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী উপলক্ষে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বাগিচাগাঁও উইন্ড কনভেনশন সেন্টারে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মো: জমীর উদ্দিন খান জম্পি ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট ছড়াকার ও কবি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক দুলাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাপ্তাহিক অভিবাদনের সম্পাদক আবুল হাসানাত বাবুল।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কুমিল্লায় পাক বাহিনীর নির্মম অত্যাচার, নিপীড়ন এবং হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেন আলোচকগণ। বিশেষ করে বাগিচাগাঁও এলাকায় কিভাবে মানুষকে নির্যাতন, নারীদের ধর্ষণ, নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে সেই করুণ ইতিহাস বর্ননা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি কাউন্সিলর জমীর উদ্দিন খান জম্পী। তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স অল্প ছিলো। কিন্তু সবকিছুই নিজের চোখে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার অপরাধে সেদিন কিভাবে বাগিচাগাঁও এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে পাক বাহিনী অভিযান চালিয়ে অত্যাচার-হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। স্মৃতিচারনের সময় এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন কাউন্সিলর জমীর উদ্দিন খান। আলোচনা সভায় উপস্থিত এলাকার নারী-পুরুষেরা আলোচকদের বক্তব্য অধীর আগ্রহে শোনেন। পিন পতন নিরবতা ছিল পুরো অনুষ্ঠানস্থলে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক দুলাল বলেন, দীর্ঘদিন এদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে দুরে রাখার অপচেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস থেকে নতুন প্রজন্মকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও ভয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা যেতনা। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া বহু সরকারী অফিসারকে অবসরে পাঠানো সহ ওএসডি করা হয়েছিল।
এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানীত করা হয়েছে। তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের এসব সুযোগ সুবিধা গ্রহণের জন্য অনেক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাও তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের ৯নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান স্বপন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মো: সোহেল। আরোচনা সভা শেষে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।