অর্থপাচার ও ভিসাবাণিজ্যের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে রিমান্ডে টানা ১৭ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কুয়েতের আরব টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার তাকে ২১ দিনের জন্য কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয়েছে।
পাপুলের পাশাপাশি তার মালিকাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মুর্তজা মামুনকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আরবি দৈনিক আল-কাবাস।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। আটকের পরদিন থেকে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল।
বাংলাদেশের এই এমপি রিমান্ডে যা বলেছেন, তা প্রসিকিউটরদের বরাতে প্রকাশ করছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। কুয়েতি কর্মকর্তাদের তিনি কীভাবে কত টাকা ঘুষ দিয়েছেন, সেসব কথাও সেখানে আসছে।
কুয়েতি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পাপুলের মদদদাতা হিসাবে ইতোমধ্যে সাতজনকে চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারীরা; তাদের মধ্যে কুয়েতের দুজন বর্তমান এবং একজন সাবেক পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন। তবে কুয়েতের বর্তমান দুই এমপি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলে খবর দিয়েছে কুয়েত টাইমস।
সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, নিজের স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করেন তিনি।
প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পাপুল, যেখানে তার বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে।
ইতিমধ্যে পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। কোম্পানির হিসাবে প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা রয়েছে বলে এর আগে পাবলিক প্রসিকিউশনের বরাতে জানিয়েছিল কুয়েতি গণমাধ্যম।
এই সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে একজন ব্যবসায়ীকে ২ হাজার কুয়েতি দিনারের মাধ্যমে জামিনে ছেড়ে দিয়ে বাকিদের জেলে পাঠানো হয়েছে।
বিদেশের মাটিতে একজন সংসদ সদস্য আটকের ঘটনা দেশের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।