গালওয়ান থেকে চিনকে হটানোই মূল চ্যালেঞ্জ

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ধারণা নিয়ে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক মতান্তর আসল বিষয় নয়। শি চিনফিং সরকারের লক্ষ্য, গালওয়ান নদী উপত্যকার অধিকার। এমনটাই মনে করছে নয়াদিল্লি। আর সেখান থেকে তাদের কী ভাবে সরানো যায়, সেটাই এই মুহূর্তে ভারতের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষত যখন এই প্রথম এই উপত্যকাকে নিজেদের বলে দাবি করছে চিন।

ইতিহাস বলছে, এই গালওয়ান উপত্যকা কৌশলগত ভাবে বরাবরই বেজিংয়ের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভারত সেখানে পোস্ট তৈরি করতে চাইলে বাষট্টি সালে (যুদ্ধের আগে) সামরিক ভাবে তার প্রতিরোধ করেছিলেন মাও জে দং। কিন্তু কখনওই সেই উপত্যকাকে নিজের বলে দাবি করেনি বেজিং।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সম্প্রতি চিনের ওয়েস্টার্ন কমান্ড ঝাং সুইলি দাবি করেছেন, গালওয়ান নদী উপত্যকায় চিনের সার্বভৌমত্ব রয়েছে। কূটনীতিকদের মতে, এই বক্তব্য, বিপদ সঙ্কেতের মতোই। ভারতীয় ভূখণ্ডের এই উপত্যকার কতটা জুড়ে তাদের নজর রয়েছে, তা এখনও সবটা বোঝা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে কূটনৈতিক উপায়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদের কতটা পিছু হটানো যেতে পারে, সে বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে।

বাষট্টি সালে গালওয়ানে ভারত একটি পোস্ট তৈরির পরে তা সংঘর্ষ বিন্দুতে পৌঁছে যায়। চিন আতঙ্কিত হয়ে ওঠে কারাকোরামের পূর্ব দিকে তাদের গতিবিধি ভারতের নজরে চলে আসবে এই ভেবে। জুলাই মাসের ৪ তারিখ ওই পোস্ট বসানো হয়। তার ছ’দিনের মধ্যে পোস্টটির একশো মিটারের মধ্যে চলে আসে চিনা সেনা। এর পরে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করা হয় জরুরি ভিত্তিতে। বৈঠকে স্থির হয়, উপত্যকার দু’পাশে সামরিক সহাবস্থান থাকবে।

কিন্তু আজ, অর্থাৎ ২০২০ সালে মে মাসের পর লে থেকে কারাকোরাম পাস পর্যন্ত রাস্তাকে কেন্দ্র করে চিনের ‘জঙ্গি আচরণ’ একটি কথাই স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেটা হল, তাদের সীমান্তবর্তী এলাকার গতিবিধি ও কার্যকলাপকে আড়াল করার জন্য এই এলাকার সামরিক আধিপত্য চায় চিন। দেবসাং-এর মতো এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণরেখার ‘পারসেপশন’ বা মতান্তরের কারণে এই সংঘাত নয়। আর এই ভূখণ্ডের মালিকানার দাবি করে গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক যুদ্ধে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে চিন।

Post Under