নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফি উদ্দিন আহম্মেদের দ্বিতীয়বারের নমুনা পরীক্ষায় কোভিড পজিটিভ এসেছে। শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রীও কোভিড-১৯ পজিটিভ। বিষয়টি গোপন রেখেই তিনি বাড়িতে সর্ব-সাধারণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। ছবিতে দেখা যায়, তিনি খালি গায়ে বসে বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলছেন। যারা কথা বলছেন তাদের মুখে কোন মাস্ক নেই। তবে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যানের মুখেও নেই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস। যার কারনে জনসাধারণের , মাঝেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা আশরাফী বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এসেছে।’
জানতে চাইলে একই কথা বলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সাঈদ। তিনি বলেন, ‘গতকাল আসা ফলাফলে রাফি উদ্দিন তিনি ও তার স্ত্রীর কোভিড পজিটিভ এসেছে।’
আজ শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সাংবাদিকেরা নাসিরনগর উপজেলা সদরের টেলিফোন অফিসের পাশে রাফি উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেখতে পান। সে সময় তার মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ছিল না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ১০ জুন প্রথমবারের নমুনা পরীক্ষায় করোনায় আক্রান্ত জানার পরেও তিনি তথ্য গোপন রাখেন এবং উপজেলা সদরে স্বাভাবিক চলাফেরা করেন। উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সভাতেও তিনি অংশ নেন।
আজ তার বাড়িতে গিয়ে তিন-চার জন সাক্ষাতপ্রার্থীকে অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদেরই একজন উপজেলার ধনকুড়া গ্রামের মোক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের বিষয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। চেয়ারম্যানের কাছ থেকে পরামর্শ পেয়েছি। ১০ মিনিটের মতো সেখানে ছিলাম।’ চেয়ারম্যান করোনায় আক্রান্ত কি না জানতে চাইলে মোক্তার বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
সামাজিক একটি বিষয় নিষ্পত্তির ব্যাপারে পরামর্শ নিতে চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলেন গোয়ালনগর গ্রামের সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তার করোনা পজিটিভ কি না সেটা আমার জানা নেই।’
নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব মেনে চেয়ারম্যানের সঙ্গে সংবাদিকদের কথা হয়। ঘরের দরজায় বসে তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে অনেক সুস্থ আছি। সামাজিক দূরত্ব সব সময়ই মেনে চলি।’
নতুন রিপোর্টে তার কোভিড পজিটিভ এসেছে কি না— তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমা আশরাফী বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়েছে। চেয়ারম্যানের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর থেকে আমিও দাপ্তরিক কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিয়েছি। প্রতিদিন মাত্র দুই ঘণ্টা অফিস করছি। চেয়ারম্যানের বাড়িতে না যেতে সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে। যদি লোকজন চেয়ারম্যানের বাড়িতে যায়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’