প্রতারণা ও যৌতুকের মামলায় কথিত সাংবাদিক এহসান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিভিন্ন প্রলোভন ও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নারীকে বিয়ে ও পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে নির্যাতনের ঘটনায় আদালতে নারী শিশু নির্যাতন আইনে দায়ের করা মামলায় কথিত সাংবাদিক কাজী এহসান আহমেদ কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কুমিল্লা চকবাজার ফাঁড়ির পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোববার তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কোতয়ালী মডেল থানাধীন চাপাপুর গ্রামের কাজী আশেক আহমেদ এর ছেলে কথিত সাংবাদিক কাজী এহসান আহমেদ গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখ ছয় লাখ টাকা দেন মোহরে বিয়ে করেন একই থানাধীন দুর্গাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের মদিনগর গ্রামের প্রয়াত আবদুল মান্নান মেম্বারের মেয়ে শিউলি আক্তারকে (৩০)। বিয়ের পর শিউলী আক্তারের পরিবার এহসানকে নগদ অর্থ, আসবাবপত্র, উপহার ও স্বর্ণালঙ্কার প্রদান করেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর এহসান শিউলী আক্তার ও তাঁর পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবী করেন। টাকা না দেয়ায় শিউলী আক্তারকে নির্যাতন করেন এবং বাবার বাড়ি মদিনগরে ফেলে চলে যান। পরবর্তীতে শিউলী আক্তার কাজী এহসান আহমেদের বাড়িতে গেলে তাকে পুনরায় মারধর করে আহত করে তাড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় শিউলী আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার কাজী এহসানের সাথে সমজোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তাঁর পরিবার পরিজন ও পরিচিতজনদের সাথে যোগাযোগ করে কোন সমাধান না পেয়ে গত জুলাই মাসে কোতয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ দেয় শিউলী আক্তারের পরিবার। থানায় অভিযোগ না রাখায় আদালতে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন (২০০০) যাহা ২০০৩ এর সংশোধিত এর ১৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হিসেবে তাকে অভিযান চালিয়ে আটক করে চকবাজার ফাঁড়ি পুলিশ।

বাদী শিউলী আক্তার প্রতিবেদককে বলেন, এহসান চরম বাটপার। একটি অনুষ্ঠানে আমার সাথে তাঁর পরিচয়। পরিচয়ে সে নিজেকে কুমিল্লার বড় সাংবাদিক দাবী করেন এবং আমাকে সাংবাদিক বানিয়ে দেয়া সহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে এক পর্যায়ে আমাকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতে সে আমার কাছে যৌতুক দাবী করে বসেন। আমার পরিবার তাকে অনেক টাকা পয়সা, উপহার দিয়েছে। তাতেও তার মন গলেনি। সর্বশেষ সে পাঁচ লাখ দাবি করে। আমি এবং আমার পরিবার পাঁচ লাখ টাকা দিতে অস্বীকার করায় সে আমাকে আমার বাড়িতেই মারধর ও নির্যাতন করে। আমার স্বজন ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে সে কৌশলে ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে আর এমন করবেনা বলে আমাকে রেখে চলে আসে। এর পর থেকে আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরবর্তিতে স্ত্রীর অধিকার নিয়ে আমি তার বাড়িতে গেলে সে আমাকে মেরে আহত করে ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি এই প্রতারকের বিচার চাই।

কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হানিফ মিয়া জানান, শিউলী আক্তারের দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় আদালতের ওয়ারেন্টে কাজী এহসান আহমেদ কে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।

Post Under