কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মাদরাসা ছাত্রী হোসনে আরা ওরফে রত্না আক্তার (১৪) এর চাঞ্চল্যকর হত্যা রহস্য উন্মোচন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজেরাই নির্মমভাবে তাকে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডের দুই সপ্তাহ পর কসবা থানা পুলিশ এই চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উন্মোচন করে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করেছে। এই হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী নিমবাড়ি গ্রামের মৃত মদন মিয়ার পুত্র শাহাদাত হোসেন সাক্কু মিয়া (৬০) ও একই গ্রামের মৃত মাজু মিয়ার পুত্র ইমন চৌধুরী (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে কসবা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা রত্না আক্তার হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছেন।
প্রেস ব্রিফিং এ কসবা সার্কেল এএসপি দেলোয়ার হোসেন জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোর বেলায় উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামের মো. নাসির মিয়ার মাদ্রাসা পড়ুয়া কিশোরী হোসনে আরা ওরফে রত্না আক্তার হত্যার শিকার হন। ওইদিনই নিহতের পিতা বাদি হয়ে একই গ্রামের রতন মিয়াকে প্রধান আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজহারনামীয় এক নাম্বার আসামী রতন মিয়াকে গ্রেফতার করে। এই চাঞ্চল্যকর মামলাটিকে পুলিশ ব্যাপকভাবে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং বিভিন্ন মাধ্যম হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে নিমবাড়ি গ্রামে শাহাদাত হোসেন সাক্কু মিয়ার গ্রুপ ও রতন ভূইয়ার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। তাদের দ্বদ্বের জেরে রতন মিয়ার গ্রুপের রহিজ মিয়া ও রহিজ মিয়ার বড় ভাই ফায়েজ মিয়া সাক্কু মিয়ার গ্রুপের লোকজনের হাতে নিহত হয়। এরই মধ্যে শাহাদাত হোসেন সাক্কু মিয়াদের বিরুদ্ধে ওই দুটি হত্যা মামলা রায়ের পর্যায়ে রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে রতন মিয়ার গ্রুপকে ঘায়েল করার জন্য নিজেরাই পরিকল্পনা মাফিক সাক্কু মিয়ার গ্রুপের সমর্থক নাসির মিয়ার মেয়ে হোসনে আরা ওরফে রত্না আক্তার (১৪) কে মেরে ফেলার ছক আকে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১০ জানুয়ারি ভোরে পরিকল্পিতভাবে মাথায় আঘাত করে রত্না আক্তারকে হত্যা করে রতন মিয়ার গ্রুপকে ফাঁসানোর জন্য হত্যা মামলা দায়ের করে।
এই হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী নিমবাড়ি গ্রামের শাহাদাত হোসেন সাক্কু মিয়া (৬০) ও একই গ্রামের ইমন চৌধুরী (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে কসবা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা রত্না আক্তার হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ জানায় জবানবন্দীর প্রেক্ষিতে জড়িত অপরাপর আসামীদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা ও মামলা তদন্ত অব্যাহত আছে। এদিকে এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায় রত্না আক্তারের পিতার করা মামলায় গ্রেফতারকৃত রতন মিয়া আইনগত সহায়তা পাবেন। প্রেস ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহায়তা করেন কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাজু আহম্মেদ। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।