ফয়জুন্নেছার ছবি পরিস্কারের অপরাধে পিস্তলের বাটের আঘাতে আহত বাসদ নেতা

কুমিল্লা নগরীর সার্কিট হাউজ মোড়ে স্থাপিত কুমিল্লার কৃতি সন্তান ও নারী জাগরণের পথিকৃৎ নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার রূপকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের ম্যুরালে কালো কালি মাখা বিকৃত ছবি পরিষ্কার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা আবদুর রাজ্জাক। হামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কুমিল্লার ইতিহাসবিদ আহসানুল কবির ফেইসবুকে নিজের ব্যক্তিগত ওয়ালে লিখেন, নবাব ফয়জুন্নেছাও রক্ষা পায়নি ওদের কাছ থেকে। ফয়জুন্নেছার মুখায়বের কালি মুছতে গেলে নিরীহ মানুষ কমরেড আবদুর রাজ্জাক কে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়। নিন্দা জানানোর ভাষা নেই, ধিক!
ইউনুছ উল্লাহ লিখেছেন, কমরেড রাজ্জাক আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিবেন কারন আপনার পাশে দাড়ানোর  সাহস আমাদের নেই! আপনার জন্য শুধু দোয়া করি আল্লাহ পাক যেনো আপনাকে দ্রুত সুস্থ করে দেন, আমিন। আরো অনেকেই এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মঙ্গলবার সকালে নগরীর সার্কিট হাউজ মোড় এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের পিস্তলের বাটের আঘাতে তিনি আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। চিকিৎসার জন্য তিনি নগরীর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আবদুর রাজ্জাক বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কুমিল্লা জেলা শাখার সমন্বয়ক। এছাড়াও তিনি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির পদে আছেন।

জানা যায়, সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর উদ্যোগে সার্কিট হাউজ মোড়ে স্থাপিত দৃষ্টিনন্দন ম্যুরালে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ড. আখতার হামিদ খান, নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার রফিকুল ইসলামের ছবিসহ বেশ কিছু প্রয়াত খ্যাতিমান ব্যক্তির ছবি স্থাপন করা হয়। গত ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীরা এই ম্যুরালের দুটি ছবিতে কালো কালি দিয়ে দেয়। বিষয়টি দেখে বাসদ নেতা নিজেই পরিস্কারের জন্য সকালে সেখানে যান। তারপিন দিয়ে কালি পরিস্কারের সময় ৭/৮ জন ব্যক্তি এসে তাকে ঘিরে ফেলেন। ৪০/৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বেগম রোকেয়া ও ফয়জুন্নেছাকে আপত্তিকর ভাষায় গালাগালি শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিস্তল বের করে এর বাট দিয়ে চোখের বাম পাশে আঘাত করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এ সময় তাকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করা হয়।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ওই ব্যক্তি পিস্তল তাক করে বলেন, একবারে গুলি করে মেরে ফেলবো। তবে গুলি করার সময় হামলাকারীর সঙ্গে থাকা অন্য লোকজন তাকে রক্ষায় সামনে দাঁড়িয়ে গেলে তিনি রক্ষা পান। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। কারা ওই হামলায় জড়িত তা শনাক্ত এবং আটকের চেষ্টা চলছে।

Post Under