ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘুষ লেনদেনকালে অডিটরসহ চারজন আটক
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দু’পক্ষই সরকারি লোক, স্বাস্থ্যবিধিও করছিলেন পালন; কিন্তু করছিলেন ঘুষ লেনদেন! সরকারি বেতনের টাকা পেতেও সরকারি আরেক দপ্তরে লাগে ঘুষ! অনেকটাই কাকের মাংস কাকে খাওয়ার দশা! ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এমনতর ঘুষের লেনদেনকালে হাতেনাতে ধরা খেলেন জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটরসহ চারজন। তাও আবার জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা বাহিনীর হাতে! পরে তাদেরকে সোপর্দ করা হয় পুলিশে।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টিলিজেন্স (এনএসআই) সদস্যরা বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকেলে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে ঘুষ লেনদেনের পাঁচ লাখ টাকাসমেত ওই চারজনকে আটক করেন। আটককৃকরা হলেন, রাজস্ব শাখার অডিটর কুতুব উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী আব্দুল হাই, নজরুল ইসলাম এবং হুমায়ুন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাষ্টার রোলে কর্মরত ৬৩ জন কর্মীর চাকরি স্থায়ীকরণ হলে বর্ধিত বেতনে এক কোটি সাত লাখ টাকার বিল বকেয়া আসে। ওই টাকা পেতে অডিট অফিসের সাথে পাঁচ লাখ টাকায় চুক্তি করেন সওজ’র কর্মীরা। চুক্তি মোতাবেক প্রথম দফায় ৬৪ লাখ টাকা তারা উত্তোলন করে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার অবশিষ্ট ৪৩ লাখ টাকার বিল প্রস্তুত করে অডিট অফিস। সেই মোতাবেকই সওজ’র কর্মীরা তাদের প্রাপ্য বিল নিতে অডিট অফিসে যান। বিল নিতে যাওয়ার পাশাপাশি সওজ কর্মচারীরা চুক্তি অনুযায়ী অডিটর কুতুব উদ্দিনকে প্রদানের জন্য নিয়ে আসেন নগদ পাঁচ লাখ টাকা। এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে যথা সময়ে এনএসঅই’র একটি টিম অটিট অডিট অফিসে গিয়ে হানা দেয় । বিল ছাড়িয়ে নিতে চুক্তি মোতাবেক নগদ পাঁচ লাখ টাকা লেনদেনকালে টাকাসমেত তাদের আটক করেন এনএসআই সদস্যরা। পরে আটককৃত চারজনকেই টাকাসহ সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এনএসআই এর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন টাকাসহ তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর এখতিয়ারধীন। বিষয়টি দুদকই তদন্ত করবে।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান জানান, ‘এই ঘটনায় নিয়মিত মামলা দায়ের হবে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।