এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায়। সুষ্ঠু ভোটে আবারো ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হলেন জেলা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিসেস নায়ার কবির। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে মেয়র প্রার্থী নায়ার কবির ২৮ হাজার ৫৫৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত মোবাইল ফোন প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক ভূইয়া পেয়েছেন ১৮ হাজার ৩৬১ভোট। আর বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জহিরুল হক পেয়েছেন ৮ হাজার ৯৬ ভোট। রোববার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ডের ৪৮ টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভায় মোট ভোটার এক লাখ ২০ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৯ হাজার ৫৬২ জন এবং মহিলা ভোটার ৬০ হাজার ৯৪২ জন।
আরো পড়ুনঃ
সূত্রে প্রকাশ, এর আগে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ প্রায় দেড়শ’ বছর বয়েসী পৌরসভায় প্রথম নারী মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেন সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবীরের সহধর্মিণী মিসেস নায়ার কবির। বিগত পাঁচ বছরে দুইশ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ছাড়াও ক্লীন ইমেজ দ্বিতীয় মেয়াদে নায়ার কবিরের জয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায় মদদ দেয়ার অভিযোগ ছিলোনা তার বিরুদ্ধে। সবচেয়ে বড় বিষয় পৌরসভাকে দুর্নীতি আর অনিয়ম থেকে দূরে রেখেছেন তিনি। নিজে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং জেলার অন্যতম একটি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও দলীয় এবং পরিবারের প্রভাবমুক্ত রেখেছেন পৌরসভাকে। তার জয়ে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন নাগরিকরা। নির্বাচন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সন্ত্রাস-গোলযোগের আশঙ্কা করছিলেন ভোটাররা। ১৮ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিস ও মিছিলে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আতঙ্ক যায় আরো বেড়ে। তবে রোববারের ভোটে ২/১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্টু ভোটের নজির সৃষ্টি হয়। বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ভোটকেন্দ্রের পাশের সড়কে হঠাৎ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এসময় পথচারী এবং কেন্দ্রের ভেতর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভোটের মাঠে ছিলো নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।
পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে ভোটকেন্দ্রসহ জেলা সদরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিনটি সাব সেক্টরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এজন্যে জেলা সদরে মোতায়েন করা হয় ৮শ’ পুলিশ ও ৪৪২ জন আনসার সদস্য। পাশাপাশি ১২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ও র্যাব সদস্যরাও ছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। নায়ার কবির তার জয়ে পৌরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।