প্রথমবারের মতো মৃত্যুর কারণ খুঁজতে ‘মৌখিক ময়নাতদন্ত’ করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এ জন্য আগামী ১০-১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে পাইলট (পরীক্ষামূলক) জরিপ কার্যক্রম।
ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের জন্য ওপেন ডাটা কিট (ওডিকে) সফটওয়্যারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। দেশের ২ হাজার ১২টি নমুনা এলাকা থেকে ৫০টিকে সাব-স্যাম্পল হিসেবে ধরে পরিচালনা করা হবে এই জরিপ।
রোববার এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ সব তথ্য জানানো হয়।
বিবিএস’র মাঠ পর্যায়ে কর্মরত যুগ্ম পরিচালক এবং গণনাকারীরা এতে অংশ নিচ্ছেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবন সম্মেলন কক্ষে উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপমহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এবং ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস বাংলাদেশের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর মো. মঈনুদ্দিন।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক একেএম আশরাফুল হক।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর যত লোক মারা যায় তার প্রায় ১৫ শতাংশ মৃত্যু হয় হাসপাতালে। বাকি ৮৫ শতাংশ মৃত্যু হয় পরিবার বা কমিউনিটিতে। হাসপাতালে মৃত্যুর ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করলেও বাসাবাড়িতে মৃত্যুর কারণ অনেক ক্ষেত্রেই অস্পষ্ট থেকে যায়। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
মৃত্যুর সঠিক কারণ না জানার ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুসারে দেশে সব মানুষের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাটা জরুরি।
এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো জরিপের উদ্যোগ নিয়েছে বিবিএস। উন্নত দেশগুলো মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের বিষয়টি আমলে নিলেও বাংলাদেশসহ এশিয়া-আফ্রিকার কিছু দেশে তা এখনও কার্যকর হয়নি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাটা জরুরি। কেননা আমরা গত বছর করোনার কারণে মুখ্য সচিবের নির্দেশনায় একটি জরিপ পরিচালনা করি। সেখানে দেয়া যায়, করোনাভাইরাসের পাশাপাশি অন্যান্য রোগের প্রার্দুভাবও বেড়ে গিয়েছিল। অনেক মানুষ মারা গেছেন অন্য রোগেও। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ছিল। সঠিক কারণ জানা থাকলে চিকিৎসা ব্যবস্থা সেইভাবে ঢেলে সাজানো যায়। তবে সঠিক তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
ডা.নাসিমা সুলতানা বলেন, দেশের স্বাস্থ্য সূচকের অনেক উন্নতি হয়েছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু অনেক কমেছে। এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে সামাজিক সূচকগুলোতে আরও উন্নতি ঘটাতে হবে। সেক্ষেত্রে সঠিক তথ্য পেতে এই জরিপ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।