সরাইলে দু’দফা সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত শতাধিক, আটক ১২

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে দু’গোষ্ঠির লোকদের মাঝে আবারও হয়েছে সংঘর্ষ। মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতের পর বুধবার সকালেও হয়েছে সংঘর্ষ। দু’দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয়েছে শতাধিক। এ ঘটনায় ১২ জন দাঙ্গাবাজকে করা হয়েছে আটক। এদিকে রাতে সংঘর্ষকালে আহত হওয়া এক বৃদ্ধা বুধবার সকালে মারা গেছেন এমন খবর পাওয়া গেলেও সংশ্লিষ্ট কেউ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার গ্রামের বজলু গোষ্ঠী এবং ওলি গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিলো। স্থানীরা জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত মিজান মিয়া মেম্বার এবং অলি মেম্বারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিলো। বুধবার সকাল দশটার সময় দ্বিতীয় দফায় মিজান মিয়া মেম্বারের এক ভাই আবদুল আমিন দুলালের সঙ্গে অলি মেম্বারের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে অলি মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিজান মিয়া মেম্বারের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালালে দ’পক্ষের মাঝে ফের সংঘর্ষ বাঁধে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে দুই পক্ষেের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০ রাউণ্ড রাবার বুলেট এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় তিন পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়। এসময় বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করা হয়। আহতদেরকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল এবং আশপাশের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে বুধবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন ফের সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশত লোক আহত হয়।

নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য আকলিমা বেগম বুধবার বেলা ১১টার দিকে জানান, ‘পূর্ব বিরোধের জের ধরেই দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে একজন মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।’ নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল চৌধুরী জানান, ‘মঙ্গলবার রাতের পর বুধবার সকালেও দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে আবুল কাশেমের বৃদ্ধা স্ত্রী মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। ওই মহিলা মারা যাওয়ার খবরে সংঘর্ষ থেমে যায়।’

সরাইল থানার পরিদর্শক (ওমি) আল মামুন-মোহাম্মদ নাজমুল আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় মেতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

Post Under