বিজিবির হাতে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ রেজাউল করিম (৩৪) আটক হয়েছে। শুক্রবার রাত ১ টায় বাংলাদেশ ভারতের সীমান্তবর্তী কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কেরানী নগর এলাকার সাজু মেম্বারের বাড়ী থেকে তাকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১০ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউর রহমান।
জানা যায়, শুক্রবার রাত ১ টায় মোঃ রেজাউল করিম তার এক সঙ্গীর জন্য সাজু মেম্বারের বাড়ীর পাশে অবস্থান করছিলো। এ সময় বিজিবির একটি টহল দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় রেজাউল করিম দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়।
এ সময় তার ব্যাগ তল্লাশী করে ১ টি. ৩২ বোরের পিস্তল ৪ রাউন্ড গুলি ১৬ পিস ইয়াবা, কৌটা মাদক এক প্যাকেট, ৩ টি ভারতীয় পরিচয়পত্র, ভারতীয় ইউসিবি ব্যাংকের ২ টি ডেবিট কার্ড, ভারতীয় বিভিন্ন প্রকারের ৭ টি কার্ড, নগদ ৭৮৫ টাকা ও কাতারের ১০ দিহরাম জব্দ করা হয়।
গ্রেফতার রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ধর্ষণসহ ৩০ টি মামলা রয়েছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, রেজাউল জেলা ছাত্রলীগর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক দেলায়ার হােসনের ঘাতক রেজাউল করিম।
দুধর্ষ সন্ত্রাসী রেজাউল করিম (৩৪) কুমিল্লা সিটি কর্পারশনর সদর দক্ষিন মডল থানাধীন ২৬ নং ওয়ার্ডের শামবক্সি (ভল্লবপুর) গ্রামের আবদুর রাজ্জাকর পুত্র।
দেলায়ার খুনের পর থেকে সে বেশির ভাগ সময়ই ভারত অবস্থান করতো। ভারতীয় পাসপাের্ট সহ দশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াত। সে বিদেশ থাকলেও বিশেষ করে সীমান্তবর্তী চৌয়ারা ও আশপাশের এলাকায় তার অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রন করতো।
তার বিরুদ্ধে কুমিলা কােতায়ালি ও সদর দক্ষিণ থানায় দুটি হত্যা, চাঁদাবাজি, মারামারি, মাদক, ডাকাতি প্রস্তুতির ৩০ টি মামলা রয়েছে।
রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সদর দক্ষিণ থানার এক প্রবাসীর স্ত্রীকে গণধর্ষণের মামলাও রয়েছে। দেলায়ার হত্যাকান্ড ছাড়াও ছাত্রলীগ কর্মী ‘রাসল’ ও ‘আপেল’ হত্যা কান্ডেরও মুল ঘাতক রেজাউল। যে কোন অপারধ সংঘটিত করেই ভারতে পালিয়ে যেত।
স্থানীয়রা জানান, রেজাউলের পড়ালেখার গন্ডি বেশি দূর নয়। সীমান্ত এলাকায় বাড়ী হওয়ায় মাদক ও অস্ত্র চোরাকারবারি হিসেবে তার অপরাধ জগৎ বাড়াতে থাকে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক দেলায়ার হােসনের ঘাতক রেজাউল করিম।
নিহত দেলায়ারর স্ত্রী জিলকজর নেছা বলেন, রেজাউল ও তার সঙ্গীরা আমাকে বিধবা ও আমার দুই শিশু সন্তানকে এতিম করেছে। আমি রেজাউলের সর্বোচ্চ বিচার চাই।
গ্রেফতারের পর রেজাউলের গ্রামের লোকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে অন্তত কুড়িজন গ্রামবাসী জানান, রেজাউল ধরা পড়েছে খুশি হয়েছি। তবে যদি সে আবার জেল থেকে ছাড়া পায় তাহলে আরো হত্যাকান্ড ঘটবে।
কোতয়ালী মডেল থানা পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, রেজাউলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে আরো দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আগামীকাল রবিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।