এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
মাস গেলেই ভাতিজাকে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা সুদ। আসল এক লাখ হিসাবের খাতায়। এমনি করে চলছে টানা তিন বছর। এই সুদের টাকার দ্বন্ধে ভাতিজার হাতে খুন হন অশীতিপর বৃদ্ধ চাচা হাজী আবদুল মালেক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পূর্বমেড্ডা মহল্লার নারকীয় এই ঘটনায় অভিযুক্ত মনিরসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) রাত আটটার দিকে ভাতিজা মনির গংদের হাতে খুন হলেন হাজী আবদুল মালেক (৮০)। নিহত আবদুল মালেক ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পূর্বমেড্ডাস্থ স্কুল মসজিদ সংলগ্ন মৃত কাসেম আলীর পুত্র। এই ঘটনায় পুলিশ ঘাতক ভাতিজা মনির হোসেন ও তার স্ত্রীকে আটক করেছেন।
আরো পড়ুনঃ
নিহতের পরিবার, স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার এশার নামাজের পর মসজিদ থেকে বাড়িতে যাচ্ছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধ হাজী আবদুল মালেক। পথিমধ্যে ভাতিজা মনির গংরা অতর্কিতভাবে ওই বৃদ্ধের উপর হামলা করে মারধর করতে থাকে। চিৎকার-চেঁচামেচিতে পরিবারের লোকজন ছুটে এসে গুরুতর আহত আবদুল মালেককে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নাজমুল হক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরবর্তী সংঘাত এড়াতে এলাকায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
নিহতের ছেলে শরিফ জানান, গত তিন বছর আগে তার চাচাতো ভাই মনিরের কাছ থেকে ব্যবসার জন্য সুদে এক লাখ টাকা নেন। তারপর থেকে প্রতিমাসে সুদ বাবদ দশ হাজার টাকা করে দিয়ে আসছিলো। করোনা মহামারীর জন্য ব্যবসার অবস্থা খারাপ হওয়ায় সময়মতো সুদের টাকা দিতে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক মাসের সুদ জমে গেছে। এই নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই আছে। আগামীকাল (১ ডিসেম্বর) সুদের আটকে থাকা ২০ হাজার টাকা দেওয়ার তারিখ ছিলো। কিন্তু টাকা ম্যানেজ করার পরও মনির ৩-৪ জন লোক সাথে নিয়ে মসজিদ থেকে ফেরার পথে বাবার উপর হামলা করে বেধরক মারধর করেন। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়েও বাবাকে বাঁচাতে পারিনি। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আবদুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনায় অভিযুক্ত মনিরসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।