কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় জুলাই—আগস্টে ছাত্র—জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১১টায় কসবা উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে আয়োজিত স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, আড়াইবাড়ি ইসলামিয়া সাঈদীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মো. আমিনুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর আমীর অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা কৃষি অফিসার হাজেরা বেগম, কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাদের, কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি মো. সোলেমান খান, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল খায়ের স্বপন। বক্তব্য রাখেন, উপজেলা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শিবলী নোমানী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কসবা উপজেলা প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
স্মরণসভায় জুলাই—আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের বাংলাদেশ প্রফেসনাল ইউনিভার্সিটির এলএলবি (অনার্স) ২য় বর্ষের মেধাবী ছাত্র শহীদ জোবায়ের ওমর খান এর পিতা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এডভোকেট জাহাঙ্গীর আহমেদ খান তার সন্তানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, তার ছেলে জোবায়ের অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। তার সন্তানের মত হাজারো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা আমাদের রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা ছিল। আর সেজন্যই সে ছাত্র—জনতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার আদেশ দেয়। কিন্তু ছাত্র—জনতার আন্দোলনের জন্য তাকে ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে হয়েছে।
এছাড়াও আন্দোলনে গুরতর আহত ব্যবসায়ী কসবা উপজেলার রাইতলা গ্রামের একিন আলীর ছেলে আল আমিন বক্তব রাখেন। সে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ ও প্রশাসনের নির্মমতার কথা বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য আল আমীন ১৯ জুলাই শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রায়েরবাগ এলাকায় পুলিশের গুলিতে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরতর আহত অবস্থায় কদমতলী হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবতীর্তে হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। সেখানে তার সার্জারী হয়। এদিকে শহীদ জোবায়ের ৫ আগস্ট বিকাল ২টায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল নিয়ে দনিয়া কলেজ থেকে শাহবাগ মোড়ে যাওয়ার পথে যাত্রাবাড়ী থানার দক্ষিণ পাশে^র্ পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকেন। সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগের ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।