ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সাথে প্রতারণা করেছে-কসবায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা
কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের তালিকাভুক্ত করেছে তারা জাতির সাথে প্রতারণা করেছে। প্রতারকদের চিহ্নিত করার দায়িত্ব জাতিগতভাবে সবার। তাদেরকে জাতির সামনে উন্মোচিত করতে হবে। আজ রবিবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবড়িয়ার কসবা উপজেলার কুল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থল পরিদর্শন কালে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক ই আজম বীরপ্রতিক এ সব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ভুয়া এবং অমুক্তিযোদ্ধা যারা তালিকাভুক্ত হয়েছে, এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া। আমরা প্রচেষ্টা নিয়েছি তাদেরকে নানান আঙ্গিকে সনাক্ত করার জন্য। মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের দিক দিয়ে সনাক্ত হবে, জনসাধারণকেও আমরা সুযোগ দিচ্ছি যাতে তাদের সনাক্ত করা যায়। যারা মুক্তিযোদ্ধা তারা এলাকতেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। তাদের সব তালিকা যা আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে এগুলি আমরা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভক্ত করে অনলাইনে দিয়ে দিচ্ছি। সেখানে একটা আপত্তি ফর্ম দিচ্ছি, যদি আপনাদের মনে হয় সে মুক্তিযোদ্ধা ছিল না, তাদের বিষয়ে আপত্তি জানাবেন। যাতে তাদেরকে চিহ্নিত করে আঙ্গুল তোলা সম্ভব হয় এবং জাতির সামনে উন্মোচিত করার সুযোগ হয়।
নির্বাচন নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক ই আজম বলেন, আাপনারা লক্ষ্য করেছেন আমাদের জাতীর মধ্যে একটা প্রচন্ড ঐক্যের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি, ঐক্যবদ্ধভাবে সংস্কার থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত সবটাই আমরা সম্পন্ন করব। এটাই আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। এখানে কাউকেই বিচ্ছিন্ন না করে সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্তগুলা হবে। সংস্কারের ব্যাপারে যে কমিশন গঠিত হয়েছে ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারির ২য় সপ্তাহের মধ্যেই রিপোর্ট দিয়ে দিবে। তখন এটা জনসম্মুখে যাবে। রাজনৈতিক দল, জনগণ এবং নানা রকমের যে স্টেক হোল্ডার যারা আছে তাদের সবার সাথে কথা বলে সরকার দ্রæত নির্বাচনের দিকে যাবে।
এদিকে উপদেষ্টা কুল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থলে পৌছেই শহীদদের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন। তিনি প্রত্যেকটি কবর ঘুরে ঘুরে দেখেন।
কুল্লাপাথর শহিদ সমাধিস্থল পরিদর্শনকালে উপদেষ্টার সাথে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইকবাল হোসেন, কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. গোলাম সরওয়ার, সহকারি পুলিশ সুপার কসবা সার্কেল দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার কুল্লাপাথরে দেশের বৃহত্তম শহিদ সমাধিস্থল অবস্থিত। এখানে ৫০ জন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। যার মধ্যে ৫জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাও রয়েছেন।