করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি কুমিল্লার সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ছিলেন। কুমিল্লার বিভিন্ন ,হলে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিলো অনেক। তাঁর মৃত্যুতে কুমিল্লার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ সামাজিক যোযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে শোক প্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করেছেন।
শনিবার (১১ জুলাই) সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, রাজশাহী স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া তিনি রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সকাল ৯টায় দিকে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরিবারের ইচ্ছে অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, ঠাণ্ডা ও কাশি থাকায় গত ২২ জুন বগুড়ার টিএমএসএস মেডিক্যালে নমুনা দেন অতিরিক্ত সচিব আমিনুল। পরদিন তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। এরপর তিনি বগুড়াতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় গত ২৯ জুন তাকে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯টায় তিনি মারা যান।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা পজিটিভ হওয়ায় পর তার ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়াও তিনি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিকে ভুগছিলেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, আমিনুল ইসলাম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৮ম (১৯৮৬) ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন।
বর্তমানে তিনি সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে তিনি রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে তিনি অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন। এরপর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সকালে করোনা আক্রান্ত হয়ে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবারের ইচ্ছে অনুযায়ী তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি পবানায় পাঠানো হবে। এরই মধ্যে পাবনা জেলা প্রশাসেকর সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় তার মরদেহ দাফনের ব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে তার আগে রামেক হাসপাতালে তাকে বিভাগীয়, জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর দুপুরের মধ্যেই তার মরদেহ পাবনায় পাঠানো হবে।
এদিকে, আমিনুল ইসলাম ৮ম বিসিএস এর মাধ্যমে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে নির্বাচিত হয়ে সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি দ্বিতীয় ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে রাজশাহীর বোয়লিয়া মেট্রোপলিটন এলাকা এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-রাজশাহী অঞ্চলের ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন।
পরে সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সহকারী পরিচালক হিসেবে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগে ও উপ-পরিচালক হিসেবে এসএলজিডিএফ প্রকল্প (ইউএনডিপিআই, ইউএনসিডিএফ ফান্ডেড), উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) হিসেবে নাটোরের সদর উপজেলা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে (উপ-সচিব) কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার হিসেবে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে তার ওপর অর্পিত সরকারি দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া সরকারের অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের রাজশাহীর স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।