বন্ডে আমদানিকৃত ইপিজেডের শুল্কমুক্ত প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাপড় আটক করেছে কুমিল্লা কাস্টমস ও ভ্যাট প্রিভেন্টিভ টিম। গত ১২আগস্ট গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা বিশ্বরোড থেকে একটি বড় কাভার্ড ভ্যান ভর্তি বিদেশী কাপড় আটক করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বহুদিন থেকে শুল্কমুক্তভাবে গার্মেন্টসের নামে আমদানিকৃত কাপড় খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগ করে আসছিলেন প্রকৃত কাপড় আমদানিকারকরা।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে নগদ অর্থে গোপনসংবাদদাতা নিয়োজিত করে কুমিল্লা কাস্টমস ও ভ্যাট টিম।
এ চক্রটি অত্যন্ত চতুর, শক্তিশালী ও সংগঠিত বলে জানানোর প্রেক্ষিতে পণ্যসহ ট্রাকটি আটকে ঝুঁকি বিবেচনায় বিশেষ সতর্কতা নিতে হয়। নিবিড় তদারকি ও সফল অভিযানের জন্য কুমিল্লার নৈশ টহলরত টিমের সাথে সদর দপ্তরের আরো ৮জন কর্মকর্তা একাধিক টিমে প্রহরারত থাকে। শহরের ভেতরের রাস্তা, বিশ্বরোড, বিকল্প সকল পথে প্রতিনিধি নিয়োজিত রাখা হয়। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া টিমকে সজাগ রাখা হয়। মাঠের টিমগুলোকে কমিশনার সার্বক্ষণিক তদারকি করেন।
ইতোপূর্বে কুমিল্লাতে এধরণের পণ্যবাহী ট্রাক আনলোড করে অন্য ট্রাকে উঠিয়ে পার করা করার প্রবণতা ছিল। প্রভেন্টিভ টীমের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা ছিল। ফলে বাড়তি সতর্কতা ও টীম ভাগ করার প্রয়োজন দেখা দেয়। প্রিভেন্টিভ টিম ভোর ৫টা থেকে বহুমুখী পাহারা দিতে থাকে।
গাড়িটি কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় পৌছানোর পর সেটি আটক করে শুরুতে ইনফর্মারের সকল তথ্য যাচাই করা হয়। তখন গাড়ি চালক অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিল। কর্মকর্তাদেরকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ২০১৮সালের নিলামের কিছু ভুয়া কাগজপত্র দেখায়। অভিযোগের মিল পেয়ে কর্মকরতারা গাড়িটি আটক করে। যা আসিফ ও আরিবা কার্গো সার্ভিস এর কাভার্ড ভ্যান নং ঢাকা মেট্রো নং-১৬-৯৪৮২ পরিবাহিত।
আটক গাড়ি থেকে ট্রাক রিসিট অনুযায়ী বন্ডেড ফেব্রিক্স ৫০০ রোল। পণ্যের পরিমাণ ৭৭০৫ কেজি যার শুল্কায়নযোগ্য মূল্যঃ ২৭,৮৩,৪৩১/-টাকা এবং পরিহার কৃত শুল্ককর ২৪,৯৩,৯৫৪/- টাকা অর্থাৎ শুল্ক পরিশোধিত মূল্য দাড়ায় ৫২,৬০,৬৪৮/- টাকা। বিভিন্ন সূত্রে মূল্য তথ্য সংগ্রহ ও এ বিষয়ে নিশ্চিত হবার জন্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রদানে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কুমিল্লার উপ কমিশনার উত্তম বিশ্বাস বলেন, প্রিভেন্টিভ টিম কর্তৃক উদ্ধারকৃত মালামাল বর্তমানে বিভাগীয় শুল্ক গুদাম, কুমিল্লা দপ্তরে সংরক্ষিত আছে। দি কাস্টমস এ্যাক্ট, ১৯৬৯ আর আওতাধীন মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন আছে।
তিনি আরো বলেন, উক্ত খাত হতে আহরিত রাজস্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলে অবৈধপথে ব্যবহারের মাধ্যমে বিক্রি হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, যা জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে পরিপন্থী।
তিনি আরো জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালানরোধে কঠোর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আমাদের কমিশনার মহোদয় প্রিভেনটিভ টিম গঠন করেন। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। আলোকিত কাস্টমস, আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে একইসাথে শুল্ক/মূসক ফাঁকি রোধে এবং সরকারের যথাযথ রাজস্ব সুরক্ষার জন্য কুমিল্লা কাস্টমস নিবারক টীমের পক্ষে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।