কাতিব হাসান মুরাদ, কুবি প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোভিড মহামারীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর গত ১৫ জুলাই থেকে শিক্ষা মন্ত্রনালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনায় অনালাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। তবে নানা জটিলতায় অনলাইনে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ আছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের।
সারেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন বিভাগে অনলাইন ক্লাসে গড়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকেন। এই অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করার উপযোগী ডিভাইস না থাকা এবং ইন্টারনেটের গতি না থাকাকে দায়ী করছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এসব কারিগরী দুর্বলতায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে যোগ দিতে পারছেন না। আবার ডিভাইস থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীবান্ধব ইন্টারনেট প্যাকেজ না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন কেউ কেউ।
ডিভাইস না থাকায় সমস্যায় পড়া প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে। কিন্তু এনড্রয়েড ফোন না থাকায় অনলাইন ক্লাস করতে পারছি না। এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন দিতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় অন্যের ফোন ধার করে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় ইউজিসে থেকে যে শিক্ষা ঋণের কথা বলা হয়েছিলো তা যদি দিতো তাহলে আমরা অনেকেই উপকৃত হতাম।’
এদিকে ডিভাইস না থাকায় শিক্ষার্থীরা যোগাদান না করতে পারলেও ক্লাসে নেয়া হচ্ছে উপস্থিতির তালিকা। ফলে উপস্থিতির উপর বিভাগভেদে যে ৫ থেকে ১০ নম্বর মূল ফলাফলের সাথে যুক্ত হয় সেটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ডিভাইস না থাকা শিক্ষার্থীরা।
ডিভাইস না থাকায় ক্লাসে যোগদান না করতে পারা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির নম্বর ও শিক্ষাজীবনে প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আহসান উল্যাহ বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত। অনেক শিক্ষার্থী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ডিভাইস ও ইন্টারনেট না থাকায় অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারছে না। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী আমাদের উপস্থিতি নিতে হচ্ছে। ফলে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। আমি এই ব্যাপারে কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। যেহেতু পরিবর্তীত একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি তাই শিক্ষার্থী যাদের ডিভাইস নেই তাদের উপস্থিতি ও এর নম্বর নিয়ে আমরা কিছুটা শিথিল থাকবো। তবে এক্ষেত্রে কতৃপক্ষের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসা জরুরি।’
শিক্ষার্থীদের ডিভাইস কিনতে ঋণ প্রদান এবং শিক্ষার্থীবান্ধব ডাটা প্যাকের জন্য মোবাইল অপারেটরদের সাথে চুক্তির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন বিভাগ থেকে পাওয়া ডিভাইস নেই এমন ৬৩৪ জন শিক্ষার্থীর তালিকা ইউজিসির নিকট পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীদের লোনের ব্যাপারে ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সাথে আমরা যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা আসেনি। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের সুলভ মূল্যে ডাটা প্রদানে বিভিন্ন সিম কোম্পানি আমাদের প্যাকেজ দেখাচ্ছে। আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করছি।’