নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
লকডাউনেও ভ্যাট রিটার্ন জমায় সাফল্য ধরে রেখেছে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। সারাদেশে যখন চলছেসর্বাত্মক লকডাউন তখন সফলতার পাখায় আরেকটি পালক যুক্ত করলো কুমিল্লার (সিইভিসি) কর্মবিলাসী টিম। এইলকডাউনের মধ্যে স্বল্প জনবল নিয়েই অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমাদানে শীর্ষস্থান অর্জন করছে কুমিল্লা ভ্যাট। আর এ নিয়ে টানাআটবার শীর্ষস্থান ধরে রাখলো এই কমিশনারেট।
দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের মধ্যে টানা আটবার প্রথম হয়ে দেশে অন্যরকম এক উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে ছয় জেলা নিয়েগঠিত কুমিল্লা ভ্যাট। কর্মচঞ্চল কুমিল্লা ভ্যাট যেন হয়ে উঠেছে সত্যিকার কর্মবীরদের এক মিলনমেলা।
অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন জমাদানের সময় সার্ভারে ক্রটি, বিদ্যুৎ ভোগান্তি ও ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন অফিসে এসেম্যানুয়াল রিটার্ন পেপার জমাদান করতে না পারা ইত্যাদি নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বসে থাকেনি এ কমিশনারেটের কর্মকর্তা– কর্মচারীগণ। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কুমিল্লা ভ্যাট অন্যান্য মাসের মতো এ মাসেও অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমাদান সম্পন্নকরেছে সুষ্ঠুভাবে। অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার হার বাড়ছে; এর মাধ্যমে অটোমেশনের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(এনবিআর) সক্ষমতা বৃদ্ধির চিত্র অধিকতর স্পষ্টতম হচ্ছে। নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে কমিশনারেট গুলোতে প্রতিযোগিতাশুরু হয়েছে। আর এই প্রতিযোগিতায় গত আট মাস ধরে প্রথম স্থান ধরে রেখেছে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কুমিল্লা।
মার্চ’২১ মাসে এই কমিশনারেটে অনলাইনে রিটার্ন জমা হয়েছে ৯৫.৪৭%। ম্যানুয়াল ও অনলাইন সহ রিটার্ন দাখিলের হার৯৫.৬০%। এরকম ব্যতিক্রমী সাফল্যের পিছনে রয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়নের অঙ্গীকারে সক্রিয় থাকা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কুমিল্লার (সিইভিসি) কর্মবিলাসী টিম। আর এ টিমকে ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়নহওয়ার মূল কারিগর হলেন কুমিল্লা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার জনাব মোহাম্মদ বেলাল হোসাইনচৌধুরী।
মাঠ পর্যায়ে নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে কমিশনারেটগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরম্ন হয়। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়েযাওয়ার সুস্থ এ প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা কমিশনারেট যেন পথ প্রদর্শক হয়ে উঠেছে। উলেস্নখ্য, গত মে/২০২০ এ জাতীয় রাজস্ববোর্ডের একই হার ছিল ২২%। বর্তমানে এনবিআরের মোট অনলাইন রিটার্ন জমার হার প্রায় ৪২.২৮%।
গত জুলাইয়ে রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৫১ শতাংশ। বর্তমান কমিশনার গত ১৫ জুলাই কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম জুম সভা করেরিটার্ন জমাকে অগ্রাধিকার ঘোষণা দেন। সভার পরপরই কমিশনার তদারকি শুরু করলেন। এ কমিশনারেটের ছয়টি জেলায়করদাতাদের ফোন, প্রতিষ্ঠানে তদারকি বাড়ানো হয়। ‘রিটার্ন ওয়ানস্টপ কাউন্টার’ গঠন করা হয়। এনবিআরের চেয়ারম্যানেরনির্দেশমতো মুজিববর্ষে দেশকে ডিজিটাল করার প্রত্যয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ববোর্ডের অধীন অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন দাখিল অন্যতম ডিজিটাল কর্মকান্ড। কুমিল্লা ভ্যাট টিম নিরন্তর ও ক্লান্তিহীনকাজ শুরু করে
টানা আটবার প্রথম হওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে সহকারী কমিশনার (সদর দপ্তর, কুমিল্লা) মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিপনবলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা কাস্টমস টিম। অনলাইন ভ্যাট রিটার্নদাখিলে কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেট টানা আটবার প্রথম। আপ্লুত হওয়ার মতো একটি বিষয়। একটা ভালো ‘টিমওয়ার্ক’ এরমাধ্যমে এ অর্জন। এ টিমকে নেতৃত্ব দিয়ে সফলতা এনে দেওয়ার অগ্রণী নায়ক আমাদের কমিশনার মহোদয়। আর এ কৃতিত্বেরদাবিদার কুমিল্লা কমিশনারেটের প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। গত আট মাসের মতো ভবিষ্যতেও রিটার্ন দাখিলের ধারা অব্যাহতথাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের অঙ্গীকারবাসত্মবায়নে মাঠে সক্রিয় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কুমিল্লা কমিশনারেট (সিইভিসি) টিম। অনলাইন রিটার্ন জমায় আটবারবারের মতো শীর্ষে এ কমিশনারেট। ‘ভ্যাট ওয়ান স্টপ সেবা সপ্তাহ’ পালন করায় করদাতাগণ অনলাইন রিটার্ন দাখিলের বিষয়েপ্রশিক্ষণ পাওয়াতে করদাতাগন এখন সহজে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারে।
কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, লকডাউনের মধ্যেও স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করাহয়েছে। এ নিয়ে টানা আটবার অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমায় প্রথম হলো কুমিল্লা ভ্যাট। সরকারের ডিজিটাল অঙ্গীকারবাস্তবায়নে বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কাজ করছে। দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ও প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূলনিয়ামক এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কর্মকর্তাদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলেউপর্যুপরি সাফল্য এনে দিয়েছে।‘আলোকিত কাস্টমস, আলোকিত দেশ’ ও ‘অতিক্রম নয় ব্যতিক্রম’ শেস্নাগানে উদ্বুদ্ধ হয়েঅর্থবছরের প্রথম থেকে কাজ করছে কুমিল্লা টিম। আলোকিত কাস্টমসের মাধ্যমে গড়ে উঠবে আলোকিত বাংলাদেশ।বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে। সুখী–সমৃদ্ধ স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গঠনে অহর্নিশ কাজ করছে বাংলাদেশকাস্টমস। আর সে স্বপ্ন পূরণের পথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কুমিল্লা এনবিআরের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছে।