এমদাদুল হক সোহাগ
বিশ্ব নাগরিকত্ব শিক্ষা প্রচারের মাধ্যমে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কো কর্তৃক অগ্রাধিকার প্রাপ্ত বিষয় সমূহ প্রসার শীর্ষক কুমিল্লায় দুই দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ব নাগরিকত্ব বলতে একজন শিক্ষার্থী তাঁর নিজের চিন্তা, অনুভূতি ও কাজে নিজেকে জাতীয়তার উর্ধে নিয়ে বিশ্বের একজন নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে বিশ্বের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। এ শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থী পৃথকভাবে এবং সম্মিলিতভাবে বিশ্বব্যাপী কাজ করার জ্ঞান, দক্ষতা, মনোভাব ও আচরণ বিকাশে সুযোগ লাভ করে।
কুমিল্লা নগরীর ঐতিহ্যবাহী জিলা স্কুল ও নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত সোমবার থেকে ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ও ইউনেস্কো ঢাকার যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় ইউনেস্কো ক্লাব এসোসিয়েনের উদ্যোগে ইউনেস্কো পার্টিসিপেশন প্রোগ্রাম ২০২০-২০২১ এর অধীন কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে জিলা স্কুল ভেন্যুতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। এসময় জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার, ইউনেস্কো ক্লাবের মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী, ন্যাশনাল কো অর্ডিনেটর হাবিবুল হায়দার চৌধুরী, উপদেষ্টা শামসুল মুক্তাদির প্রমুখ। দুপুর দুইটা থেকে নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: জামাল নাসের চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আবদুল মজিদ, কুমিল্লা ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা ফেরদৌস মজুমদার। ইউনেস্কো ক্লাবের মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী, ন্যাশনাল কো অর্ডিনেটর হাবিবুল হায়দার চৌধুরী, উপদেষ্টা শামসুল মুক্তাদির প্রমুখ।
প্রধান অতিথি প্রফেসর জামাল নাসের চৌধুরী বলেন, বিশ্ব এখন হাতের আঙুলের মাথায়। চাইলেই বিশ্বের সব কিছু নিমিষেই খোজে পাওয়া সম্ভব। মোবাইল ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির কল্যাণে এতকিছু সম্ভব হয়েছে। বর্তমান শিক্ষার্থীদের বিশ্বের যা কিছু ভালো তা গ্রহণ করতে হবে। যা খারাপ বা সমাজ মেনে নেয়না তা বর্জন করতে হবে। মোবাইলের প্রতি আশক্তি কমাতে হবে। মোবাইল আশক্তি শিক্ষার্থীদের ধংস করে দিচ্ছে। সহপাঠী পরিবার, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে সম্পর্ক ও শেয়ারিং বাড়াতে হবে। বিশ্ব নাগরিকত্বের মাধ্যমে নিজেদের মেধা-চিন্তা শক্তি, চেতনা ও মননের বিকাশ ঘটবে।
আয়োজকেরা বলেন, বিদ্যালয় পর্যায়ে বিশ্ব নাগরিকত্ব শিক্ষার প্রচলন বাংলাদেশকে একটি বিশ্ব প্রস্তুত দেশে রুপান্তরিত করতে সক্ষম হবে যা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৪ (এসডিজি-৪) এর অন্যতম বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্মশালঅর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধাচর্চার মাধ্যমে জ্ঞান ভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধির কৌশলের সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তাছাড়া, পুরো বিশ্বকে আপন করে চিন্তা করে বিশ্বের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা পালন করবে।