অনলাইন ডেক্স:
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে, এই দোহাই দিয়ে আমাদের কৃষ্টি–সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে কোনো কিছু করা কখনোই সমীচীন নয়। আইন অনুযায়ীও সেটি দণ্ডনীয় অপরাধ,’ বলেন তথ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশে ২০১২ সালে প্রণীত এ–সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী এ ধরনের অশ্লীলতা প্রচারের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর কারাদণ্ড, উল্লেখ করেন তিনি।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অশ্লীল ওয়েব সিরিজ নির্মাতা ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেসব সার্ভিস প্রোভাইডার এ ধরনের ওয়েব সিরিজ প্রচার করার সুযোগ করে দিয়েছে, তাদের এ কাজের জন্য আদৌ কোনো লাইসেন্স আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি লাইসেন্স না থাকে, তাহলে এই অবৈধ কাজের জন্য অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর লাইসেন্স থাকলেও তাদের ডোমেইন ব্যবহার করে এ ধরনের অশ্লীল জিনিস প্রচার করাও দণ্ডনীয় অপরাধ। সে বিষয়েও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
টিআরপির বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনুমোদনহীন টিআরপি সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, এ ক্ষেত্রে একটি শৃঙ্খলা অবশ্যই আনতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন কে কাকে টিআরপি দেয়, সেটি আমাদের জানা নেই। টিআরপি যারা করছে, তারা কোথা থেকে অনুমতি নিয়েছে, কে তাদের লাইসেন্স দিয়েছে—সেটি অনেকের প্রশ্ন। কারণ, বাংলাদেশে টিআরপি নির্ধারণের জন্য সরকার অনুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে যেমন কেবল নেটওয়ার্কে টিভি চ্যানেলের সিরিয়াল সামনের দিকে রাখার জন্য, এমনকি টিভি চ্যানেল যাতে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, সে জন্যও নানা ধরনের অশুভ প্রতিযোগিতা ছিল, অনৈতিকতার আশ্রয় নেওয়া হতো, সেটি আমরা বন্ধ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, যে অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানগুলো টিআরপি নির্ধারণ করে, সেখানেও অশুভ, অসুস্থ প্রতিযোগিতা হয়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ইউরোপের দেশগুলোতে টিআরপি কীভাবে নির্ধারণ হয়, সরকার তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সবচেয়ে বড় টেলিভিশন-শিল্পের দেশ ভারতে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে একটি সংস্থা আছে, সেই সংস্থা টিআরপি ঠিক করে দেয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে অ্যাটকো (অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার এবং অন্যান্য অংশীজন যারা আছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এখানে অবশ্যই দ্রুত একটি শৃঙ্খলা নিয়ে আসব। কোনো অনুমোদনবিহীন প্রতিষ্ঠান কোন টেলিভিশন কে কত বেশি দেখে, সেটি বলার বৈধ কোনো এখতিয়ার রাখে না।’অশ্লীল ওয়েব সিরিজ নির্মাতাদের সতর্ক করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘ওয়েব সিরিজ, সিনেমা বা যেকোনো কিছু নির্মাণ ও প্রচার করার ক্ষেত্রে আমাদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হয়। আমাদের একটি কৃষ্টি এবং সংস্কৃতি আছে, আমাদের সমাজের একটি মূল্যবোধ আছে। এটি অনেক সময় অনেকে মাথায় রাখেন না’।