কুমিল্লা নগরীর বাগিচগাঁও ফায়ার সার্ভিস রোডে অবস্থিত আল-নূর হসপিটালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ১৭ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু নূর মোহাম্মদ বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মো.সবুজ মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শনিবার সকাল ১০ টায় তানিয়া আক্তার এবং বাবা সবুজ মিয়া তাদের একমাত্র ছেলের প্রস্রাবের রাস্তার সমস্যা নিয়ে কুমিল্লা বাগিচাগাঁও আল-নূর হসপিটালে চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তারের পরামর্শে ভর্তি হন। ডাক্তার তাদের বলেন অপারেশন করলে সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, তাই রাতে অপারেশনের জন্য রাত ৮ টায় ওটিতে নেয়া হয় শিশুটিকে।
অপারেশনের জন্য ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। অপারেশনের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার দেবাশীষ চক্রবর্তী ও এনেস্থিসিয়া ডাক্তার ফখরুল শিশুকে অজ্ঞান করার ইনজেকশন দিলে শিশু নূর মোহাম্মদ চোখ বন্ধ করে ফেলে আর চোখ মেলেনি। রাত সাড়ে নয়টায় ডাক্তার জানায় শিশু নূর মোহাম্মদ মারা গেছে। এ ঘটনায় পুরো হসপিটাল জুড়ে ছিলো শোকের মাতম। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে মায়ের আহাজারিতে আর কান্নায় ভারি হয়ে গেছে হসপিটালের ভিতর আর বাহির।
নিহত শিশুর মা তানিয়া আক্তার বলেন, আমি আমার ভালো ছেলেকে নিয়ে হসপিটালে আসছি, আমার ভালো ছেলেকে তারা মেরে ফেলেছে। রাতের ৭টায় এসে আমার স্বামীর কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে ৮ টায় ওটিতে নিয়ে যায়। সেখানে ঢুকানোর পরে আমার ছেলেকে একটা ইনজেকশন দেয় এবং সাথে সাথে আমার ছেলে চোখ বন্ধ করে ফেলে আর চোখ মেলেনি। আমার ছেলে মারা গেছে রাত ৯ টায় এখন দুপুর ২টা বাজে এখনো আমার ছেলের লাশের মধ্যে বরফ মেডিসিন কিছুই দেয় নাই। তারা আমার ছেলে ফালাইয়া চলে গেছে আর কোন খবর নেয় নাই।
নিহত শিশুর বাবা সবুজ মিয়া বলেন, আমার ভালো ছেলেকে তারা মেরে ফেলেছে। আমার ছেলে প্রস্রাবের রাস্তায় সমস্যা ছিলো এই সমস্যার জন্য এতো বড় সমস্যা হতে পারে না। আমার স্বাক্ষর নিয়ে রাতে অপারেশন করানোর জন্য ওটিতে নিয়ে গেছে। একটু পরে এসে বলে আমার ছেলে মারা গেছে। ডাক্তার দেবাশীষ চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করতে মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তারকে ফোন দিলে মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা ডিপুটি সিভিল সার্জন ডা.নাজমুল আলম বলেন, আমাদের কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। আমরা যেহেতু বিষয়টি জেনেছি তদন্ত কমিটি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।