কসবায় করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

শেখ মো. কামাল উদ্দিন
বৈশ্বিক করোনা যেন অপ্রতিরোধ্য। বিশ্বের প্রায় সকল দেশের ন্যায় বাংলাদেশও এর হানা থেকে মুক্ত নয়। প্রতিবেশী ভারতের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা দেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী ত্রিপুরা রাজ্যের নিকটবর্তী।
বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে সিলেট বিভাগ এবং উত্তর বঙ্গের সাথে যোগাযোগের একমাত্র পাকা রাস্তা কসবা উপজেলার বুক চিড়েই। রাজধানী শহর ঢাকা ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গ, সিলেট বিভাগ এবং ময়মনসিংহসহ উত্তর বঙ্গের সাথে যোগাযোগের একমাত্র রেলপথ মাধ্যম কসবা উপজেলার উপর দিয়েই রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সড়ক পথটি কসবার অদূরে আখাউড়ার মণিয়ন্দের পাশ ঘেঁষেই নির্মিত হচ্ছে। দেশ-বিদেশে যাতায়াতের এ গুরুত্বপূর্ণ জনপদে চলাচলের বিধিনিষেধ যথাযথ পরিপালনের প্রতি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এলাকার খেঁটে খাওয়া কর্মজীবী মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই বেরোতে চায়। প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যবিধি মানার উপর জোর দেয়া হচ্ছে। ২৭ জুলাই কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও মিডিয়াকর্মীদের সাথে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম’র সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক এমপি ভার্চুয়ালী অংশগ্রহণ করেছেন। অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন, কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন ; কসবা পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল, উপজেলা পরিষদ ভইস-চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ভূইয়া প্রমুখ।
বিগত এক-দেড় সপ্তাহে এলাকার প্রায় দু’শতাধিক বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে আক্রান্তের হার। স্বাস্থ্যকর্মীগণ ঝুঁকি নিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ভূইয়াসহ কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলার দেলী পাতাইসার কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী মো. আবদুল হান্নান গত রোববার ভয়াবহ করোনার ছোবলে প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্তরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সমাধিস্থ করা হচ্ছে।
কসবা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে, মহাসড়কের বাজার ও শপিংমলে জনাকীর্ণ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করছেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাছিবা খান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অরুপ পাল জানান, স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি রেপিড এন্টিজেন টেস্ট স্যাম্পল গ্রহণ অব্যাহত আছে। সপ্তাহের শনিবার সোমবার ও বুধবার স্যাম্পল গ্রহণ করা হয়।
নিম্ন আয়ের লোকজনের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভাইরাসজনিত করোনা প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধিতে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে| 

Post Under