কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
২০১৮ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ সাত বছর চেষ্টা চালিয়েও রহস্যজনক কারনে কসবার তারাপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়নি। প্রায় এককিলোমিটার দুরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ঠিকই গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভিযোগ তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার কারসাজি করে গ্যাস উত্তোলন না করে ভারতকে গ্যাস তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন।
কসবার গ্যাস কসবায় চাই এ স্লোগানকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টায় তারাপুর গ্যাস ক্ষেত্র এলাকা থেকে শুরু করে কসবা রেলওয়ে স্টেশন রোড এলাকায় বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলে এ মানববন্ধন। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জমির মালিক, ব্যবসায়ীসহ অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কসবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা তানভীর ইসলাম শাহিন, সাইদুর রহমান হৃদয়, মো. শরীফ, মো. শহিদুল খা, তাহমিনা আক্তার প্রমুখ। তাদের এ আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কসবা পৌর বিএনপির আহবায়ক মো. শরীফুল হক ভূইয়া, জাতীয়তাবাদী যুবদলের কসবা উপজেলা শাখার সদস্য সচিব মো. জিয়াউল হুদা শিপন, শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন, ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিক জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
মানববন্ধনে কসবা তফজ্জল আলী ডিগ্রী কলেজ, কসবা মহিলা ডিগ্রী কলেজ, কসবা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কসবা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কসবা পৌর উচ্চ বিদ্যালয়, কসবা আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। মানববন্ধনটি এক পর্যায়ে বিক্ষোভে পরিণত হয়।
উল্লেখ থাকে যে, কসবা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল গত ২০ আগস্ট কসবার তারাপুর গ্যাস ক্ষেত্রে গিয়ে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করে গ্যাসের অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল। কেন গ্যাস উত্তোলন হয়নি। সালদা গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন ব্যবস্থাপক ও কসবার তারাপুর গ্যাস ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন এর কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা তানভীর ইসলাম শাহীন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার নেতৃবৃন্দের হাতে থাকা তথ্যমতে এবং বাপেক্সে থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী তারাপুর গ্যাসকুপে সম্ভাবনাময় গ্যাস থাকা সত্ত্বেও অনিয়ম ও রহস্যজনক কারনে বন্ধ রাখা হয় বলে দাবি করেন। এখানে প্রচুর পরিমানে গ্যাস মজুদ রয়েছে যা দেশের ঘাটতি পুরনে সহায়ক হবে। দ্রুত এটি উত্তোলনের দাবী তাদের।
তাদের দাবী ভারতের সাথে আঁতাত করে এই সাত বছর ধরে গ্যাস উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ রাখে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। এই গ্যাসকুপ খনন থেকে শুরু এই পর্যন্ত প্রচুর অনিয়ম হয়েছে যা এলাকাবাসী জানেন না। তিনি প্রায় তিন বছর যাবত বিভিন্ন দপ্তর থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করেন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট তাদের দাবী এই গ্যাসকুপ খননে সকল অনিয়ম এবং উত্তোলন বন্ধ রাখার কারন জনতার সামনে তুলে ধরে পুনরায় গ্যাসকুপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করে কসবাবাসীর দাবী যেন পুরণ করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের পক্ষে জসিম উদ্দিন বলেন, কুপ খনন কার্যক্রম শুরুতে তিনি সহ অন্যান্য কৃষকের নিকট থেকে অধিগ্রহনকৃত জমির টাকার জন্য বাপেক্স’র সংশ্লিষ্টদের ধর্ণা দিয়েও সুফল পাচ্ছেননা। তাদের দাবী হয় জমিগুলো অধিগ্রহন করে সকল টাকা বুঝিয়ে দেয়া হোক নয়তো কৃষকের জমি কৃষককে ফেরত দেয়া হোক।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, কসবার তারাপুর এলাকায় বিপুল পরিমান জায়গা অধিগ্রহন করে ২০১৮ সাল থেকে বাপেক্স গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন। দীর্ঘ সাত বছরে সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করেও বাপেক্স গ্যাস উত্তোলন শুরু করতে পারেনি।