কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মঙ্গলবার (২১ মে) বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেওয়া এবং প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জাল ভোট দেওয়ায় ৫জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল কাওসার ভূইয়া ভোট স্থগিত করে পুনরায় ভোট নেওয়ার দাবী করেছেন।
কসবার বাদৈর ইউনিয়নের মান্দারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে কাপ—পিরিচের সমর্থকরা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মমতাজ আলীকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং তার সাথে অশোভন ও আপত্তিজনক আচরণ করেছে। ওই কেন্দ্রে দুইজনকে সাত দিন করে কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
কসবার আকছিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কাপ—পিরিচ প্রতীকের সমর্থকরা আনারস প্রতীকের এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আনারস প্রতীকের সমর্থক খন্দকার আতাউর রহমান বলেন, কেন্দ্রের পাশেই কাপ পিরিচের সমর্থকের বাড়িতে দাঁ—লাঠি রাখা হয়েছে। আমাদের এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রে একজনকে সাতদিনের কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
কুটি অটল বিহারী উচ্চবিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোটের পেপার ছেড়ার আগেই কেন্দ্রে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার টেবিলে সিল দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার খাড়েরা সরকারি প্রাথমিক বিদালয় কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান কমপক্ষে ২০টি কেন্দে্র তার এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়েছে। মারধর করা হয়েছে আমার কর্মীদের। আমি অভিযোগ করলে প্রশাসন তা আমলে নেয়নি। আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিকট প্রহসনের এ নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করছি।
কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের আকছিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ায় মো. সজিব (২২) নামের এক ব্যক্তিকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। তিনি আকছিনা গ্রামের ময়নাল হক ছেলে।
এ ছাড়াও বাদৈর ইউনিয়নের মান্দারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ায় দুইজনকে কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। তারা হলেন মান্দারপুর গ্রামের সুমন মিয়া ও খোকন মিয়া।
মেহারী ইউনিয়নে শিমরাইল সাতপাড়া এলাকায় জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করায় রুহুল আমিন নামের একজনকে তিনদিন এবং জসিম উদ্দিন নামের অন্য একজনককে সাতদিনের কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহারিয়ার মুক্তার বলেন, জাল ভোট দেয়া ও চেষ্টা করার অপরাধে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও যেখানে কোন সমস্যার খবর পাওয়া গেছে সেখানেই ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃংখলা বাহিনী তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পৌছে ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।
উল্লেখ্য উপজেলা পরিষদের নির্বাচন চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ—সভাপতি ও আইনমন্ত্রীর ফুফাত ভাই মো. সাইদুর রহমান স্বপন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভূইয়া। রুহুল আমিন ভূইয়া সমর্থন করেছেন সাইদুর রহমান স্বপনকে। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন রাশেদুল কাওসার ভুইয়া ও সাইদুর রহমান স্বপন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন ও কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেঠ সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া। এ উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন ও কসবা পৌরসভায় ৮৩টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। তাদের মধ্যে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮১ হাজার ৩৬৬জন।