কসবায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শংকা, হামলার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারিকে কুপিয়ে রক্তাক্ত

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় উপজেলা নির্বাচনে আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া প্রতিপক্ষ কাপ পিরিচ প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের দ্বারা যে কোন সময় হত্যা হতে পারেন বলে আশংকা করছেন। তিনি বলছেন, তাঁর সমর্থকদের মারধোর করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। নির্বাচনী মাঠে সমতা নেই এই অভিযোগ এনে সোমবার (২০ মে) বেলা দেড়টার দিকে তাঁর কসবাস্থ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তুলেছেন। তিনি নির্বাচনে ৩৮টি কেন্দ্রে ঝুকিপূর্ণ তালিকা করে নিরাপত্তা আরো জোরদার করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

আনারশ প্রতীকের সমর্থক এমদাদুল হক পলাশের উপর গত রোববার গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পথে আক্রমন হয়েছে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল কাউছার ভূইয়া বাদী হয়ে ২০জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় রাতেই পুলিশ ওয়াসিম মিয়া নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

জনাকীর্ণ এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তাঁর নির্বাচনের প্রধান সহকারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক পলাশকে রাতের বেলায় বাড়ি ফেরার পথে প্রতিপক্ষ কাপ পিরিচ সমর্থকরা কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তার অবস্থা আশংকাজক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অপর সমর্থক লেশিয়ারা গ্রামের মনির ডিলারের বাড়ি ভাংচুর এবং মারধোর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন্য ত্যাগী মানুষ। আমি ছাত্রলীগ, যুবলীগ করেছি। আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলাম। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান। আমি দুই বার মাননীয় আইনমন্ত্রী মহোদয়ের এপিএস ছিলাম। আমার নির্বাচনী গাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে। তাদের প্রভাবে আমি বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রচারে যেতে পারিনি। আমি নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি। যেকোন সময় আমাকে মেরে ফেলতে পারে। আমি মাননীয় আইনমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

তিনি বলেন, উপজেলার ৮৩টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। তাদের মধ্যে শাহপুর, শিমরাইল, ধজনগর, পানিয়ারুপসহ কয়েকটি এলাকায় তিনি নির্বাচনী প্রচারনা করতে পারেননি। সেখানে গেলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তার সমর্থকদের মারধোর করা হচ্ছে। তাই ৩৮টি নির্বাচনী কেন্দ্রকে অধিক ঝুকিপূর্ণ তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. এমরান উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আফজাল হোসেন রিমন ও  তাঁর সমর্থিকরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার কসবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও আইনমন্ত্রীর ফুফাত ভাই মো. সাইদুর রহমান স্বপন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভূইয়া। রুহুল আমিন ভূইয়া সমর্থন করেছেন সাইদুর রহমান স্বপনকে। এ  নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন রাশেদুল কাওসার ভুইয়া ও সাইদুর রহমান স্বপন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন ও কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেঠ সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া। এ উপজেলায়  ১০টি ইউনিয়ন ও কসবা পৌরসভায় ৮৩টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। তাদের মধ্যে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮১ হাজার ৩৬৬জন।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে কাপ পিরিচ পতীকের প্রার্থী মো. সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, আমার সমর্থিত লোকজনদের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এমদাদুল হক পলাশের উপর হামলায় আমি ও আমার সমর্থিতরা কেউ জড়িত নয়। উল্টো আনারস প্রতীকের সমর্থকরা আমার সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শাহারিয়ার মুক্তার বলেন, আমরা যখন যে অভিযোগ পেয়েছি সেটিই তাৎক্ষনিক ভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। মাঠ পর্যায়ে প্রত্যেককে সমহারে দেখার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, উপজেলা ৮৩টি কেন্দ্রের প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে আমরা কাজ করছি।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ বলেন, এমদাদুল হক পলাশের উপর আক্রমনের ঘটনায় থনায় ২০জনের নামে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে থেকে ওয়াসিম মিয়া নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে সে থানা হাজতে রয়েছে।

Post Under