কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদল ও পৌর যুবদলের আহবায়ক কমিটি ৭দিনের মধ্যে বাতিলের আল্টিমেটাম দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ২০১৯ সালে গঠিত আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ।
কসবা প্রেসক্লাবে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো. কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব আবদুর রহমান সানীর নাম বিক্রি করে তার বড় ভাই ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের নামধারী কবির আহম্মেদ ভূঁইয়া কমিটি বাণিজ্যের মাধ্যমে উপজেলা যুবদল ও পৌর যুবদলের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত না করেই মাসুদুল হক ভূঁইয়া দিপুকে আহŸায়ক ও জিয়াউল হুদা শিপনকে সদস্য সচিব করে নিয়ম বহির্ভুতভাবে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। একইভাবে মহসিন আলমকে আহŸায়ক ও রাকিব মিয়াকে সদস্য সচিব করে কসবা পৌর যুবদলের কমিটিও গত ১২ জুন স্বাক্ষর করে ১২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কসবা উপজেলা যুবদলের আহŸায়ক মো. কামাল উদ্দিন। এ সময় তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
সংবাদ সম্মেলনে কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের সংবিধান লংঘন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুবদল তাদের পদপদবী টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে কসবা উপজেলা যুবদল ও পৌর যুবদলকে মেরুদন্ডহীন করতে এ পকেট কমিটি ঘোষণা করেন। এ কমিটিতে তৃণমূলে জনপ্রিয় ও বিগত আন্দোলনে জেল-জুলুমের শিকার ত্যাগী কর্মিদের পদবঞ্ছিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কামাল উদ্দিন আরো বলেন, ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কুমিল্লা বিভাগীয় যুবদলের টিম প্রধান জাকির হোসেন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের উপস্থিতিতে কসবা উপজেলা যুবদল ও পৌর যুবদলের প্রার্থীদের দ্বিতীয়বারের মত সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকার শেষে কসবা উপজেলা যুবদলের আহŸায়ক মো. কামাল উদ্দিনের কোন বিকল্প প্রার্থী না থাকায় কুমিল্লা বিভাগীয় টিম প্রধান জাকির হোসেন সিদ্দিকী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মো. কামাল উদ্দিনকে আহবায়ক ও শরিফুল হক স্বপনকে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কামাল উদ্দিন জানান, আহবায়ক কমিটি বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি। কমিটি বিলুপ্ত না করেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবদলের আহবায়ক স্বাক্ষরিত দুটি কমিটি গত ১২ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়। যা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও নিয়ম বহির্ভূত। এসময় যারা আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিল না এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তানদের নিয়ে গঠিত পকেট কমিটি ৭দিনের মধ্যে বাতিল করার আল্টিমেটাম দেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় তারা কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, আবদুর রহমান সানীর প্রভাব খাটিয়ে তার বড় ভাই কবির আহাম্মদ ভূঁইয়া জেলা কমিটিকে দিয়ে রাতের আধারে তড়িঘড়ি করে কসবা উপজেলা ছাত্রদলের ৯ নেতাকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে বহিষ্কার করেন। তিনি এ বহিষ্কারাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার চান।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহবায়ক মো. সেলিম অপু, মেহেদী হাসান রুবেল, মানিক সরকার, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহŸায়ক গোলাম মোস্তফা, মো. মোহন সরকার, মো. সৈয়দ আলী ও সদস্য সচিব মো. হেলাল উদ্দিনসহ উপজেলা, পৌর যুবদল ও বিভিন্ন ইউনিয়নের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. ইয়াসিন’র সাথে আজ শনিবার দুপুরে এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নতুন কমিটি ঘোষণা করলে পুরনো কমিটি আপনাআপনিই বিলুপ্ত হয়ে যায়। বর্তমান কমিটি বৈধ কমিটি। কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কমিটি গঠন করা হয়নি।