কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন।
বুধবার (২ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ‘নবীনবরণ ও বিদায়’ অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. এএফএম আবদুল মঈনের বক্তব্যকে বিকৃত করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশে ২ তারিখে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় অনুমোদিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।
এর আগে গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মার্কেটিং বিভাগের ‘নবীনবরণ ও বিদায়’ অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন বলেন, দেশে দুর্নীতি হচ্ছে দেখেই তো উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কথা বলতে পারে। কিন্তু এই যে ঘুষ খায়, এজন্য মানুষ পদ্মার পাড়ে যায় ইলিশ খেতে। এতে পদ্মার পাড়ের গরিব মানুষেরা ধনী হচ্ছে। অর্থনীতির সব মেশিনারিজগুলো তখন কাজ করে। কারণ আমাদের হাতে এখন পয়সা আছে। পয়সা আসছে কোথা থেকে, ঘুষ থেকে। এ বিষয় নিয়ে অর্থনীতিবিদগণ কখনো কোনো বিরূপ মন্তব্য করবে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। যারা নৈতিকতা নিয়ে কাজ করে তাদের কাছে খারাপ। তবে অর্থনীতির জায়গা থেকে যদি বলি, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাধা নয়। তাহলে চায়না কেন এত উন্নত। চায়নাতে সবাই দুর্নীতি করে।
পরে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে আজ জরুরি মিটিংয়ের মাধ্যমে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে আমরা কোনো সাংবাদিককে বহিষ্কারাদেশের জন্য সুপারিশ করিনি। আমরা শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন আইনে বা নিয়মে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।
এ বিষয়ে প্রতিবেদককে উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
অন্যদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আব্দুল মঈনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বহিষ্কারের বিষয়টিকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সংবাদকর্মীরা।