এমদাদুল হক সোহাগ
কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় কুমিল্লার সুনামধন্য শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জহিরুল হক ও তার স্ত্রী ফারহানা আফরিন হিমিকেবাসায় ও চেম্বারে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই চিকিৎসক ও তার স্ত্রীকেকুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় রেসকোর্স এলাকায় শাপলা টাওয়ার নামের ওই চিকিৎসকের ব্যক্তিগত বাসা ও চেম্বারে এঘটনা ঘটে। এদিন রাত ৯টার দিকে কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ওই চিকিৎসকের অবস্থাবলতে গিয়ে জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ ছাড়া ওই চিকিৎসককে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জহিরুল কুমিল্লা নগরীর রেসকোর্স এলাকার নুরুল হকের ছেলে। তিনি কুমিল্লারবেসরকারি ইস্টার্ন মেডিক্যালের সাবেক প্রভাষক। নগরীর রেসকোর্স এলাকার শাপলা টাওয়ারের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটেথাকতেন এবং সেখানেই তার চেম্বার। দীর্ঘদিন ধরে ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে পরিচালনা কমিটি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
এর জের ধরে প্রতিপক্ষ শনিবার দুপুরে হামলা চালায়।
এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত একই ভবনের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন মুরশেদ ভূঁইয়া ওরফে পাপ্পু (৫২) নামের একজনকে পুলিশআটক করেছে। পাপ্পু রেসকোর্স এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে।
ডা. জহিরুল হকের ভাই মো. কামরুজ্জামান ও জহিরের স্ত্রী হিমির বড় ভাই কাজী শরিফ জানান, রেইসকোর্সে শাপলা টাওয়ারেরপরিচালানা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও চাঁদা দাবির দ্বন্দ্বে একদল লোক এসে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে।
এ সময় ডা. জহির মারাত্মক আহত হয়। তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
ডা. জহিরুল হকের ভাই মো. কামরুজ্জামান আরো বলেন, পাপ্পু নামের একজন আগেও অনেকবার চাঁদা চেয়েছে। কিন্তু আমারভাই চাঁদা দেয়নি। আমার ভাই বলেছিল আমি স্থানীয় বাসিন্দা আমি চাঁদা দেব না।
আমার ভাইয়ের চেম্বারে প্রচুর রোগী হয়। তাই তারা সুযোগ পায়নি। দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা না পেয়ে শনিবার দুপুরে আমার ভাইয়েরখালি চেম্বারে তাকে হামলা করে। পাপ্পুর সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল। ভাইয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। উনাকে আইসিইউতেচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। যে কারণেএখনই তাকে শঙ্কামুক্ত বলা যায় না। তবে ঘটনার পর থেকে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমরা ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করে ওইচিকিৎসকের অবস্থা জানাতে পারব।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কামরান হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ফ্ল্যাট মালিকদেরভবন পরিচালনা কমিটির নির্বাচন নিয়ে বিরোধে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরআটকের চেষ্টা চলছে।
এদিকে চিকিৎসকের উপর এমন বর্বর হামলার প্রতিবা জানিয়েছেন চিকিৎসক নেতৃবৃন্দরা। কুমিল্লা জেলা বিএমএ এর সভাপতিডা আবদুল বাকী আনিস, সাধারণ সম্পাদক ডা আতাউর রহমান জসীম এবং স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক ডা মোর্শেদুল আলমএ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষী হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবী জানিয়েছেন।