থাইরয়েড অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি, যা হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। আর মানুষের শরীরে এটি নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রয়োজনের চেয়ে কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হলে তা শরীরের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
বর্তমানে থাইরয়েডের সমস্যা আরও পরিচিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি দেখা যায়। সারা বিশ্বে প্রতি চার নারীর একজনের মধ্যে এ সমস্য দেখা দেয়। আর ৬০ শতাংশ নারীই জানেন না যে তাদের থাইরয়েডের সমস্যা হয়েছে কিনা।
থাইরয়েডের ছয়টি প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে জানুন, যেগুলোতে নারীদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি—
১. অপ্রত্যাশিত ওজন কম বা বেশি হওয়া
থাইরয়েডের মাত্রা আপনার সামগ্রিক বিপাকের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই আপনার যদি হঠাৎ ওজন কমে যায় বা বেশি হয়ে যায়, তবে সেটি থাইরয়েডের সমস্যার কারণে হতে পারে। এমনটি হলে আপনার থাইরয়েড পরীক্ষা করানো উচিত।
২. ঘাড়ের চারপাশে ত্বক কালো হয়ে যাওয়া
থাইরয়েডের অন্যতম একটি প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে— ঘাড়ের চারপাশে ত্বক কালচে হয়ে যাওয়া। এ ছাড়া ত্বকের শুষ্কতা, চুলকানি, মাথার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া বা নখ ভেঙে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে থাইরয়েডের সমস্যার কারণে। তাই এমনটি হলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো ভালো।
৩. ক্লান্তি বোধ করা
অনিয়ন্ত্রিত বা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির অনুভূতি হতে পারে আপনার থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণ। অকার্যকর থাইরয়েড আমাদের বিপাকীয় ক্রিয়ালাপে অনেক প্রভাব ফেলার কারণে তা আমাদের নিয়মিতভাবে ক্লান্তিভাব ও শক্তির ঘাটতি করে অলস করে তুলতে পারে। এ ছাড়া হৃদস্পন্দনের দুর্বলতা, পেশি দুর্বলতা এবং শরীরে কম্পন দেখা দিতে পারে থাইরয়েডের কারণে।
৪. ঘুমের সমস্যা
থাইরয়েডের আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে— ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা। থাইরয়েডের কারণে কাজের প্রতি অনীহা আপনার ঘুমকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ছাড়া রাতে অতিরিক্ত ঘামা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা আপনার ঘুমের আরও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
৫. মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা
থাইরয়েড মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। হঠাৎ মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত চাপ অনুভব করা, উদ্বেগ, কাঁপুনি, খিটখিটে ভাব দেখা দিতে পারে থাইরয়েডের কারণে। এমনটি হলে আপনার থাইরয়েড পরীক্ষা করানো উচিত।
৬. ঋতস্রাবে সমস্যা
থাইরয়েডের মাত্রা তারতম্যের কারণে নারীদের মাসিকের সময়সীমার পরিবর্তন হতে পারে। থাইরয়েড সরাসরিভাবে নারীদের প্রজনন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই মাসিকের যে কোনো ধরনের পরিবর্তন দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া