অনলাইন ডেক্স:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরীক্ষার খরচ কমিয়ে দিল বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবগুলো। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও রাজ্য সরকারের অনুরোধের পর এ সিদ্ধান্ত হয়।
করোনা সক্রমণ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে করোনার চিকিৎসা এবং নমুনা পরীক্ষা করা হলেও রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ল্যাবে করোনা পরীক্ষার বিভিন্ন অংকের খরচ নিত। এরপর ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশের ফল নমুনা পরীক্ষার জন্য সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ হাজার রুপি নির্ধারণ করে দেয় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর। এটাও বহু বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র মানছিল না। এরপরেই এ নিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে দাবি তোলা হয় দেশের সর্বত্র একনীতি এবং এক খরচ নির্ধারণ করে করোনার পরীক্ষার খরচ দেশব্যাপী অভিন্ন করা হোক।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বৃহস্পতিবার কলকাতার সব নামী বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ল্যাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক করে। রাজ্য সচিবালয় নবান্নতে এ সভা হয়। সেখানে রাজ্যের মুখ্যসচিব করোনা পরীক্ষার খরচ কমিয়ে আনার অনুরোধ জানান। এতে সায় দেয় বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ল্যাব কর্তৃপক্ষ। এরপরেই গতকাল শুক্রবার তারা করোনা পরীক্ষার খরচ কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এখন এই রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি ৪৬টি ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর কেউ ১৫ শতাংশ আবার কেউ ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। শুক্রবারই সুরক্ষা ডায়গনস্টিকস এই পরীক্ষা খরচ ২৮০০ থেকে কমিয়ে ২২৫০ নির্ধারণ করে। ড: লাল প্যাথল্যাবস ৪৫০০ রুপির পরিবর্তে কমিয়ে করে ২৪০০ রুপি। মেডিকা হাসপাতাল করে ৩৯০০ রুপির পরিবর্তে ২৪০০ রুপি। এভাবে বেসরকারি সব হাসপাতাল , ক্লিনিক ও ল্যাব কমিয়ে দেয় করোনা পরীক্ষার খরচ।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বে গড়া তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার এক নির্দেশে বলেন, ‘এক দেশ এক খরচ এই নীতিতে সারা দেশে বেঁধে দেওয়া হোক করোনা পরীক্ষার খরচ। কীভাবে গোটা দেশে এই খরচ অভিন্ন করা যায়, তা দেখতে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তৈরি করুক একটি কমিটি। কেননা এখন কোনো কোনো রাজ্য এই পরীক্ষা র খরচ ২২০০ রুপি আবার ৪৫০০ রুপিও নিয়ে থাকে। এটা একেবারেই ঠিক নয়।’
এরপরেই অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়, ‘আপনারা করোনা পরীক্ষার খরচের উর্ধ্বসীমা স্থির করুন।’ এই ডিভিশন বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন বিচারপতি এস কে কউল এবং বিচারপতি এম আর শাহ।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে এখনো বেড়ে চলেছে করোনার সক্রমণ। গতকাল শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এখন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯০। সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় এই রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫৫ জন। আর মারা গেছেন ১১ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৫২৯। তবে এই রাজ্যে বাড়ছে সুস্থতার হারও। গতকাল বলা হয়েছে, এখন এই রাজ্যে সুস্থতার হার বেড়ে দাড়িয়েছে ৫৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩০২ জন।