মোহাম্মদ শাখাওয়াৎ হোসাইন
আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জনগনের কাছে যায় না, তারা রাজনীতির জন্য যায় ঢাকার আমেরিকান দুতাবাস, ব্রিটিশ দুতাবাসসহ বিভিন্ন দুতাবাসে। তারা মনে করে দূতাবাসের ঘাড়ে উঠে আপনাদের শাসন করবে। তারা আপনাদের দুই পয়সার দাম দেয় না। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাদেরকে নিয়ে রাজনীতি করে এবং আপনাদের উন্নয়ন করে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সুপার মার্কেট চত্ত¡রে কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল হক এসব কথা বলেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করার স্বপ্ন দেখছিলেন, তখন কিছু বেঈমান, মিরজাফর তাকে হত্যা করে। শুধু তাকে নয়, তাঁর পরিবারের ১৭ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা বলতে পারি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশকে হত্যা করা। তারা মনে করেছিল বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা করা গেলে বাংলাদেশকেও হত্যা করা যাবে।
মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে অর্ডিনেন্স জারী করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার রহিত করে দেয়। যা পাকিস্তান শাসকরাও করে নাই। শুধু তাই না জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকুরী দিয়েছেন এবং পালানোর জন্য বিমান দিয়েছেন। জিয়া মুসলিম লীগার ও রাজাকারদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেছেন এবং রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। পরবর্তীতে এরশাদ সরকার ফারুক এবং রশিদকে ফ্রিডম পার্টি করে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া খুনি রশিদকে ভোটারবিহীন নির্বাচনে বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়েছেন এবং তার আমলে বিচার বলে কিছুই ছিল না বরং তিনি রাজাকারদের মন্ত্রী বানিয়েছেন। তিনি ক্ষমতায় এসে দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক সন্ত্রাস তৈরী করেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের ২২জন নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছেন। তার আমলেই উলফাদের জন্য আনা ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল তারা বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের প্রতিশোধ হবে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা বানিয়ে দেখানো, বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কোন দিন মরবে না। বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশে মারা যায় না।
আরো পড়ুনঃ
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন তৈরি করা হবে। সেই আইন প্রায় ড্রাফট হয়ে গেছে। জনগন সহযোগিতা করলে সেই আইন পাশ করা হবে। আমরা নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের সত্যিকারের ইতিহাস জানাতে চাই। আমরা কোন প্রতিহিংসার জন্য তাদেরকে চিহ্নিত করবো না। বাঙালির সামনে সত্য ইতিহাস উপস্থাপন করার জন্য তাদেরকে চিহ্নিত করবো।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা কয়েকজন র্যাব কর্মকর্তার উপর স্যাংশন দিয়ে জনগনকে ভয় দেখাতে চেয়েছিল। অথচ বিএনপি সরকারের আমলে আমেরিকার পরামর্শে র্যাব তৈরী হয়েছিল। র্যাবের উপর স্যাংশন দিয়ে কাজ না হওয়ায় চালু করেছে ভিসা নীতি। এ ব্যাপারে আমিরিকার প্রতিনিধি দল আমার বক্তব্য জানতে চাইলে আমি বলি, আপানার দেশের নীতিতে আমার কোন কথা নেই। এই ভিসা নীতি সকলের জন্য হলে আমাদের বলার কিছুই নেই। কিন্তু কাউকে টার্গেট করে করা হলে আমার কিছু বলার আছে। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে এতে অপমানবোধ করি।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত¡াবধায়ক সরকার বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে তত্ত¡াবধায়ক সরকার সম্পূর্ণ অবৈধ। সংবিধানের বাইরে কোন নির্বাচন হবে না। তাই শেখ হাসিনার অধিনেই আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং শেখ হাসিনাই থাকবেন সরকার প্রধান। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবেন।
মন্ত্রী বলেন, তারেক জিয়া তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে নাকে খত ও বন্ড দিয়ে বিলাতে চলে গেছেন। ২০১৮ সালে বিএনপি বলল নির্বাচন করবে। নির্বাচনে তারা কসবা-আখাউড়া নির্বাচনী এলাকায় চারজনকে দলীয় মনোনয়ন দেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেহই নির্বাচনে দাঁড়াইল না। আর লন্ডন বসেই তারেক জিয়া নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য সবার কাছ থেকে টাকা নিলেন।
কসবা উপজেলার আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানীর সভাপতিত্বে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল কাওসার ভুইয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী মো. আজহারুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভুইয়া, মো. আনিছুল হক ভূইয়া, মো. সাইদুর রহমান স্বপন, কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ছিদ্দিকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এম এ আজিজ, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন, কসবা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. রুস্তম খা, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আফজাল হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক কাজী মানিক, আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।