এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহ। মাদকসহ গ্রেপ্তারকৃতের মুক্তির দাবীতে আয়োজিত মানবন্ধন পণ্ড হলো পুলিশি বাঁধায়। বুধবার (২৯ জুলাই) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে তার সমর্থকেরা। পরে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টাও ভেস্তে যায়।
মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টাকারী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ওই নেতার সমর্থকদের দাবী, মাসুম বিল্লাহকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তারা এঘটনার সঠিক তদন্তের দাবী জানান। এদিকে জেলার সরাইল উপজেলা এলাকায় ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তারকৃত মাসুম বিল্লাহকে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে পাঠিয়েছে জেলহাজতে।
বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন মাদকসহ গ্রেপ্তারকৃত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহর সমর্থকেরা। তারা মাসুম বিল্লাহর মুক্তির দাবীতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাঁধা দেয়ায় পণ্ড হয়ে যায় তাদের মানববন্ধন কর্মসূচি। এ বিষেয়ে সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে ফেনসিডিলসহ এবং পুলিশকে মারধরের ঘটনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুম বিল্লাকে সরাইল থানা পুলিশ আটক করে। এঘটনায় তার সমর্থকেরা মানববন্ধন করতে চাইলে তাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’ পরে দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তার সমর্থকরা কিছু সময় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসে সেখান থেকেও তাদের সরিয়ে দেন। এতে তাদের সেই কর্মসূচিও যায় ভেস্তে।
উল্লেখ্য,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মাসুম বিল্লাহকে (৩৫) মঙ্গলবার বিকেলে সরাইল থানা পুলিশ ছয় বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে। এসময় পুলিশের উপর হামলাও করেন মাসুম বিল্লাহ। সঙ্গে থাকা জেলা সদরের পূর্বমেড্ডার জসিম উদ্দিনের পুত্র এনামুল হককেও আটক করাসহ জব্দ করা হয় মোটরসাইকেল। পুলিশ জানায়, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে টহল পুলিশের তল্লাশিতে পড়েন মাসুম বিল্লাহ। সরাইল থানার এএসআই মো. আলাউদ্দিন এক কনস্টেবল নিয়ে মাসুমকে তল্লাশি করতে গিয়ে লাঞ্ছিতও হন। তল্লাশিকালে মাসুমের কাছে থাকা ছয় বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেন। এ অবস্থায় মাসুম আবারো এএসআই আলাউদ্দিনকে মারধর করেন। একপর্যায়ে সিএনজিযোগে মাসুম বিল্লাহকে সরাইল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে থানায় নেয়ার পরপরই সরাইল উপজেলার একাধিক জনপ্রতিনিধি মাসুমকে ছেড়ে দেবার জন্য পুলিশকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগও করেন।
মাসুম বিল্লাহ নিজেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবেও পরিচয় দিতেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরো তিনটি মামলা। ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় সরাইল থানায় দায়ের হয় আরো দু’টি মামলা। জেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা জানান, সংসদ সদস্যের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কোনো ধরণের অফিসিয়াল ডকুমেন্ট নেই। মাসুম বিল্লাহ এমনিতেই এটা বলে বেড়াতেন। কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবেই।
সরাইল থানার পরিদর্শক (ওসি) এ.এম.এম নাজমুল আহমেদ জানান,’মাদকসহ গ্রেপ্তারকৃত সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুম বিল্লাহকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।