ভারতের কর্নাটকে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অধ্যায় থেকে মহীশূরের শাসক টিপু সুলতান ও তার বাবা হায়দার আলীকে বাদ দেয়া হয়েছে।
এনডিটিভির খবরে দাবি করা হয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে রাজ্য সরকার ২০২০-২১ সালের পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কারণে অষ্টাদশ শতকের এই শাসককে পাঠ্যবইয়ের অধ্যায় থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
তবে ষষ্ঠ ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে টিপু সুলতানকে নিয়ে অধ্যায়টি থাকছে।
সিলেবাস পুনর্বিবেচনা করে তা কর্নাটক পাঠ্যপুস্তক সমিতি (কেটিবিএস) তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে।
তাতে দেখা গেছে, সপ্তম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের পঞ্চম অধ্যায়কে পাঠ্যবই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, যাতে হায়দার আলী, টিপু সুলতান ও ঐতিহাসিক মহীশূর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু করোনার দরুণ পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করায় এ অধ্যায়টি বাদ পড়েছে।
তবে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কর্মকর্তারা বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে ষষ্ঠ ও দশম শ্রেণিতে টিপু সুলতানকে নিয়ে অধ্যায়টি বহাল আছে।
মাস দুয়েক আগে টিপু সুলতানকে মহিমান্বিত করে লেখা অধ্যায়টি বাদ দিতে জোরালো দাবি তুলেছিল দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এ বিষয়ে তদন্ত করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করা হয়েছিল।
কিন্তু বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি থেকে এই শাসককে বাদ না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই কমিটি। কর্নাটক কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিভাকুমার বলেন, রাজনৈতিক এজেন্ডা থেকেই বিজেপি সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
টিপু সুলতান একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ইতিহাস হলো ইতিহাস। আপনি তা পরিবর্তন করতে পারবেন না। কাজেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারছি না।
কর্নাটকে বিজেপি সরকার গঠনের পর পরই টিপু সুলতানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন বাদ দেয়া হয়েছে। এর আগে প্রতি বছর সরকার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করত।
টিপু সুলতান ‘ধর্মীয় গোঁড়া’ ছিলেন বলে অভিযোগ উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপির।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনমনীয় শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে মহীশূরের এই শাসককে। ১৭৯৯ সালে শ্রীরঙ্গপত্তমে নিজের দুর্গ রক্ষায় ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে তিনি নিহত হন।
শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর বা মহীশূরের বাঘ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি।
ভারতের স্বাধীনতাকামিতার জন্য তাকে ভারতের বীরপুত্র বলা হয়। তিনি বিশ্বের প্রথম রকেট আর্টিলারি এবং বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করেছিলেন।
তিনি তার শাসনকালে বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক উদ্ভাবন চালু করেছিলেন। পাশাপাশি একটি নতুন ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা, যা মহীশূরের রেশম শিল্পের বিকাশের সূচনা করেছিল।