স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কান্দিরপাড় ফুটপাতে ক্রেতাদের ঢল

এমদাদুল হক সোহাগ:
রাত পোহালেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহুর্তে করোনা ভয় উপেক্ষা করে প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফুটাতে তাদের জন্য কেনাকাটা করতে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় ফুটপাতে ভিড় করেছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কান্দিরপাড়, মনোহরপুর, বাদুরতলা এলাকায় সড়কের পাশের দোকার ও ফুটপাতের উপর বসা দোকানগুলোতে পছন্দের জামা কাপড় কিনতে ভিড় করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বিশেষ করে, কান্দিরপাড় টাউনহল মাঠের উল্টোপাশে ফুটপাতের উপর বসা কাপড়ের দোকানগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষের ঢল নামে। শেষ সময়ে ক্রেতা বিক্রেতা সবাই-ই ব্যস্ততার সাথে বিকিকিনি করতে দেখা গেছে। তবে সামাজিক দূরত্ব মানার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের যে নির্দেশনা রয়েছে তার কোন পাত্তাই ছিলোনা। অধিকাংশ ক্রেতা বিক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। টাউনহলের সামনের ফুটপাতে দোকান ও কেতাদের ভিড়ের কারনে গিজগিজ করে চলতে হয়েছে অন্য পদচারীদের।

অপর দিকে, অভিজাত বিপনী বিতান সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, নিউ মার্কেট, আনন্দ সিটি সেন্টার, সাইবা ট্রেড সেন্টারেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। রেইসকোর্স এলাকার ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় সকাল ও দুপুরে তেমন ভিড় না থাকলেও বিকালে ক্রেতাদের ভিড় ছিলো। তবে মার্কেটের ভেতর হাটা চলার জন্য পর্যাপ্ত রাস্তা থাকায় জটলা মনে হয়নি।
অপরদিকে, বিকেলে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় যানবাহন ও মানুষের ভিড়ের কারনে যানজট দেখা যায়। দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের যানজট নিরসনে বেগ পেতে দেখা যায়। প্রশাসনের নমনীয়তায় কান্দিরপাড় এলাকায় প্রচুর ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সাও চলাচল করেছে। যারকারনে যানবাহনের চাপে হেটে চলাও মুশকিল ছিলো। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর দিক দিয়ে দেশের অন্যতম হটস্পট কুমিল্লায় ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের গাছাড়া ভাবে চলার কারনে করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন অনেকে।

কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুত্রবার জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৭জন। তার মধ্যে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকার ৩১ জন। তাছাড়া চৌদ্দগ্রাম ৭ জন, বরুড়া ৩ জন, মেঘনায় ৩ জন, লাকসামে ২জন এবং বুড়িচংয়ে একজন। এখন পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৫০৬জন। তার মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ৩৯৪৩জন। মারা গেছেন ১৪৬জন।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও জেলার সদ্য সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মুজিব রহমান বলেন, কুমিল্লা নগরী ঘনবসতিপূর্ণ একটি শহর। করোনায় আক্রান্তের দিক দিয়ে নগরীর অবস্থা এমনিতেই খুব নাজুক। সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পড়া ও হাত ধোয়া এই তিনটি বিষয় না মানতে পারলে ঈদের পর করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে শুক্রবার ভর্তি রোগীর সংষ্যা ১৩১জন। যা খুবই উদ্বেগজনক। কঠিন এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। কুমিল্লার অধিকাংশ মানুষ মাস্ক পড়েনা। সংক্রমন মোকাবেলায় শতভাগ মাস্ক পরে চলার আহবান জানান তিনি।

Post Under