২০১৩ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন বলিউডের উঠতি তারকা জিয়া খান। সাত বছর পর একই পথে হাঁটলেন নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় তারকা সুশান্ত সিংহ রাজপুত।
দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় সামান্য হেরফের হলেও তারা যে মানসিক চাপ, স্বজনপোষণ ও কোণঠাসার কারণে আত্মহত্যা করেছেন ধীরে ধীরে তা স্পষ্ট হচ্ছে।
সুশান্তের শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে মেয়ে হারানোর সেই স্মৃতি ফের সামনে আনলেন জিয়া খানের মা রাবিয়া আমিন।
২০১৩ সালে জিয়া খানের আত্মহত্যার ঘটনায় সেই সময় অভিনেতা সুরজ পাঞ্চোলিকে জড়িয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল।
দাবি করা হয়েছিল, সুরজের সন্তান এসেছিল জিয়ার গর্ভে। সুরজ ক্রমাগত গর্ভপাতের জন্য চাপ দিতেন জিয়াকে। এছাড়াও প্রতিদিন মারধর, অত্যাচার, অকথ্য গালিগালাজ তো ছিলই।
এমনও রটেছিল, অপেশাদার ধাত্রী দিয়ে নাকি জোর করে গর্ভপাত করিয়ে ভ্রূণ ওয়াশরুমের কমোডে ফেলে দিয়েছিলেন সুরজ। যার থেকে তীব্র রক্তক্ষরণ হয়েছিল জিয়ার। শেষে বন্ধ ঘরে নিজেকে শেষ করে দেন অভিনেত্রী।
এক ভিডিওবার্তায় রাবিয়া বলেন, ‘এ শোক যাওয়ার নয়। এ অভাব মেটার নয়। আমি ভুক্তভোগী। তাই সুশান্তের পরিবারের সবার মনে কী ঝড় চলছে বুঝতে পারছি। কী ভাষায় সমবেদনা জানাব, বুঝতে পারছি না।’
এরপরেই তিনি অভিযোগের আঙুল তোলেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান ও তার পরিবারের দিকে।
রাবিয়া বলেন, ‘লন্ডন সিবিআই ডেকে পাঠিয়ে বলেছিল, শিগগির আসুন। বিশাল বড় সূত্র মিলেছে। খবর পেয়ে ছুটে যেতেই গোয়েন্দা সংস্থার গলায় ভিন্ন সুর। সালমান খান চাপ দিচ্ছেন তদন্ত বন্ধের, জানিয়েছেন, তার ‘সাথিয়া’ ছবির নায়ক সুরজ। ছবির পেছনে প্রচুর টাকা ঢেলেছেন। এখন এসব হলে তিনি লোকসানের মুখে পড়বেন। তারা যেন তদন্ত গুটিয়ে নেয়। দরকারে যা লাগবে তিনি দেবেন!’
রাবিয়ার এই মন্তব্য ফের ঘি ঢালল সুশান্তের অপমৃত্যুর আগুনে। ইতিমধ্যেই খান পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন পরিচালক অভিনব কাশ্যপ।
এদিকে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার ঘটনায় সালমান খান ও করন জোহরসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে।
আগামী ৩ জুলাই এ মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা অভিযোগে আইনজীবী সুধির কুমার ওঝা বলেন, ষড়যন্ত্র করে এই আট ব্যক্তি সুশান্তকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করেছে। যেটা হত্যার সমতুল্য অপরাধ।
অভিযোগে আদিত্য চোপড়া, সাজিদ নাদিয়াতওয়ালা, সঞ্জয় লিলা বানসালি, ভুষণ কুমার, একতা কাপুর ও পরিচালিক দিনেশের নামও রয়েছে।
এসব ব্যক্তিরা সুশান্তের চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে দেয়নি বলে দাবি করা হয়। বলা হয়, তাদের কারণেই চলচ্চিত্র অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি সুশান্ত সিংকে।
গত রোববার মুম্বাইয়ের বান্দ্র ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের চলতি সময়ের সফল অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। ৩৪ বছর বয়সী এই অভিনেতা গত ছয় মাস ধরে মানসিক বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন বলে জানা গেছে।