এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
পাওনা টাকা ও বিয়ের দাওয়াত নিয়ে দু’গোষ্ঠির মধ্যে ছিলো বিরোধ। এরই জেরে গ্রামের দোকানে আড্ডা মারার সময় দুই যুবকের কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে মনির হোসেন ও ইশান নামে দুই যুবক টেটাবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অপর ১০ জন। এই ঘটনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা এলাকার।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টায় উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের লামাবায়েক গ্রামে ঘটে বর্বরোচিত এই ঘটনা। নিহতরা হলেন লামাবায়েক গ্রামের মিলন মিয়ার ছেলে ইশান মিয়া (২২) ও সিরাজুল ইসলামের পুত্র মনির হোসেন (২৪)। সংঘর্ষে আহত ১০ জনের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাসেল মিয়াকে (৩৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সংঘাত এড়াতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের লামাবায়ক গ্রামের বেপারীবাড়ির আলী আজম প্রায় ৬/৭ মাস আগে সৌদী প্রবাসী মিজানুর রহমানের কাছ থেকে শুটকির ব্যবসার জন্য এক কোটি টাকা ধার নেন। একাধিক তারিখ দিয়েও টাকা না দেয়ায় বিষয়টি নিয়ে আলী আজম ও মিজানুরের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পাশাপাশি বিয়ের দাওয়াত নিয়েও বিরোধ ছিলো। এদিকে গত সোমবার মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামের দোকানে আড্ডা দেয়ার সময় বাদশা মিয়ার বাড়ির আহমদ আলীর পুত্র আলী আজম ও বেপারীবাড়ির মতলব মিয়ার পুত্র দুলাল মিয়ার কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় আলী আজম দুলালকে চর থাপ্পড়ও মাড়েন। অপরদিকে আলী আজমের দেয়া তারিখ অনুযায়ী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইশান মিয়া, মনির হোসেন, তফছির মিয়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাওনা টাকা আনতে আলী আজমের বাড়ি গিয়ে টাকা চাইতেই আলী আজম তার বাড়ির লোকজনকে নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে টেঁটা, বল্লম, ছুরি নিয়ে ইশান, মনির ও তফছিরের উপর চড়াও হয়ে রাস্তায় ফেলে মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে ওই পক্ষের লোকজনও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় প্রতিপক্ষেরর টেঁটার আঘাতে বেপারীবাড়ির মিলন মিয়ার পুত্র ইশান মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন। একই বাড়ির সিরাজুল ইসলামের পুত্র মনির হোসেনকে গুরুতর আহত অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। তাছাড়া আহত অপর ১০ জনের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাচ্চু মিয়ার পুত্র তফছির মিয়াকে (৩৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আলী হোসেনের পুত্র রাসেল মিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তী সংঘাত এড়াতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
আশুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. জাবেদ মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তী সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’