ইকবালের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে কুবিতে শিক্ষার্থীদের সংহতি সমাবেশ

কুবি সংবাদদাতা

সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারের নিয়মবহির্ভূত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহিষ্কারের সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ণের দাবিতে সংহতি সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

রবিবার (১৩আগস্ট) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশ শেষে তারা শান্তির আহ্বান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে গোলাপ বিতরণ করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ইকবালের বহিষ্কারাদেশ দ্রুত প্রত্যাহার ও শিক্ষা জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

অর্থনীতি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবির রায়হান বলেন, ‘আমরা খুবই হতাশ হয়ে আজকে রাস্তায় দাড়িয়েছি। আমাদের সহপাঠী ইকবাল মনোয়ার মতপ্রকাশের অপরাধে ছাত্রত্ব হারিয়েছে। এমন নিয়মবহির্ভূত বহিষ্কার আমরা মানতে পারি না। একজন হত্যা মামলার আসামি যদি আত্মসমর্পণ করার সুযোগ পায়, রুদ্র কেন বিনা নোটিশে বহিষ্কার হবে। কোন আইনে বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কার করেছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন হটকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি আমরা। আপনারা এসব বহিষ্কারের সুষ্ঠু ব্যখ্যা দিন, নীতিমালা প্রকাশ করুন। আমরা ইকবালের বহিষ্কারাদেশ দ্রুত প্রত্যাহার চাই।’

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান জেরিন বলেন, ‘ইকবালের এ বহিষ্কার নিয়মবহির্ভূত। এমন বহিষ্কারে প্রশাসন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দেখাতে পারে নি। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। একজন সাংবাদিকেরও সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলছি, আপনারা শিক্ষার্থীদের জন্য, শিক্ষার্থীরা আপনাদের জন্য নয়। আমরা আপনাদের হাতে আমরা জিম্মি থাকতে চাই না।’

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ‘প্রশাসন ইকবালের যে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে এটি শুধুমাত্র ব্যক্তি আক্রোশ বহিঃপ্রকাশ। আমরা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনারা কোন আইনে শিক্ষার্থী বহিষ্কার করেছেন সেটি ব্যখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে আগামীদিন সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোন কিছু নিয়ে দাঁড়াতে পারবে না। শিক্ষা জীবনের সাথে ইকবালের সাংবাদিকতা জড়িত নয়। আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, আপনি যাদের পরামর্শে কাজ করছেন দিনশেষে তারাই আপনাকে বিপদে ফেলবে। আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শুধু ভিসি নন, আপনি আমাদের অভিভাবক। ইকবালের আইনবহির্ভূত বহিষ্কারাদেশের কারণে সারা বাংলাদেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুন্ন হয়েছে।
ইকবাল সাংবাদিক হিসেবে শুধুমাত্র বক্তব্য প্রকাশ করেছে কিন্তু ইকবালকে কোন ওয়ার্নিং না দিয়ে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা চাই না এভাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুন্ন হোক।’

এদিকে ইকবালের আইনবহির্ভূত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে যথারীতি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা। রবিবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত ৩১শে জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ২ আগস্ট সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Post Under